অর্থনীতি

নারী চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে প্রকল্প নেবে সরকার

জাতিসংঘের চারটি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সিলেট বিভাগের তিন জেলার নারী চা-শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের পরিবারের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রকল্প নেবে সরকার। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে দুই বছর এবং প্রস্তাবিত খরচ ২০ লাখ ডলার (প্রায় ১৭ কোটি টাকা)।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদ এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম।

চা-শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর ওপর গুরত্বারোপ করে আবুল কালাম আজাদ বলেন, চা-শ্রমিকদেরকে শুধু চা-পাতা সংগ্রহের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে চা-পাতাকে আরও সুন্দরভাবে প্রক্রিয়াজাত করার বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষ করে তুলতে পারলে এটা চা-শ্রমিক এবং চা-শিল্প উভয়ের জন্যই মঙ্গলজনক। শিল্পে নতুন নতুন ভ্যালু যোগ করতে পারলে শ্রমিকদের আয় বৃদ্ধি, জীবনমানের উন্নয়ন এবং চা-শিল্পের উন্নয়ন সাধিত হবে।

তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের মূল সূত্র হলো সবাইকে নিয়েই উন্নয়ন। কাউকে পেছনে ফেলে রেখে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে না। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমরা পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প চা-খাতের নারী শ্রমিকদের সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের চারটি সংস্থা কাজ করতে আগ্রহী হয়েছে। আমরা তাদের স্বাগত জানাই।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে সারা দেশে কাজ করে যাচ্ছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় তার আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহযোগিতায় চা-শ্রমিকদের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায় বলেন, চা-বাগানের শ্রমিকদের, বিশেষত নারী শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চা-শ্রমিকরা অসুস্থতা, চাকরি বা আয়ের নিরাপত্তাহীনতা এবং বার্ধক্যজনিত শারীরিক দুর্বলতাসহ নানা সমস্যায় পতিত হয়। চা-শ্রমিকদের মাঝে মাদক, পারিবারিক সহিংসতা, জোরপূর্বক বিবাহ, বাল্য বিবাহ, কৈশোরে গর্ভধারণ, যৌন হয়রানি এবং বহুবিবাহের মতো অনেক সমস্যা বিরাজমান । এক্ষেত্রে নারী শ্রমিকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই প্রকল্প গৃহীত হলে চা-শিল্পের এসব সমস্যা নিরসন সহজ হবে। শ্রমিকরা এসব সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তা, আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিয়াইনেনসহ জাতিসংঘের চারটি অঙ্গসংস্থা এবং কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button