জাতীয়

ইথিওপিয়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন করলো বাংলাদেশ দূতাবাস

ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা আনন্দঘন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস’ পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।

মঙ্গলবার দিনের প্রথমভাগে ইথিওপিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

ইথিওপিয়াতে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বড় জমায়েত না হলেও কিছুসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে ধর্মীয় বাণী পাঠ এবং বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবার, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী শহীদদের রূহের শান্তি ও মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও সামগ্রিক দেশবাসীর উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে দেয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর দর্শকদের মধ্য থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কয়েকজন বক্তব্য দেন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি তাঁদের বিশেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

পূর্বাহ্নের অনুষ্ঠানের সমাপণী বক্তব্য দেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের ক্ষণগণনার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন এবং জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীর বিশেষ তাৎপর্য তুলে ধরেন। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশ এবং আদ্দিস আবাবায় বৃহৎ পরিসরে আয়োজন স্থগিত হলেও তিনি বছরের বাকি অংশে যথাযথ অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। চা চক্রের মধ্য দিয়ে পূর্বাহ্নের অনুষ্ঠানমালা সমাপ্ত হয়।

এরপর বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে দিবসটি উপলক্ষে আদ্দিস আবাবার বিভিন্ন স্কুলের বেশ কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে শুরু হয় চিত্রাংকন এবং দাবা খেলার প্রতিযোগিতা। বিকেল সাড়ে ৫টায় শুরু হয় অপরাহ্নের মূল অনুষ্ঠান, যেখানে স্থানীয় ইথিওপিয়ান, ইথিওপিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

শুরুতেই এ মহতী অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। তিনি দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও সোনার বাংলার স্বপ্ন ধারণ করে বাংলাদেশের আগামী প্রজন্ম যাতে বাংলাদেশকে উন্নত মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশকে উত্তোরত্তর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আগামী প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহীত উন্নয়নমূলক পদক্ষেপসমূহ এবং বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি ও উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করেন।

পরবর্তী পর্বে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্য থেকে উৎসাহী অংশগ্রহণকারীরা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় শিশু দিবসের ওপর রচিত কবিতা, সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। আগত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং নবীন প্রজন্মের জন্য ক্রমাগত কাজ করে যেতে তাঁদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এরপর, আগত দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে রাষ্ট্রদূত এবং তার সহধর্মিনী দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাংকন এবং দাবা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের মাঝে পুরষ্কার ও সনদপত্র প্রদান করেন। শিশু-কিশোরদের উপস্থিতিতে একটি বিশেষ কেক কেটে দিবসটি উদযাপন করা হয়। পরিশেষে, উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার পরিবেশন করা হয়।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button