ময়মনসিংহ বিভাগসারাদেশ

শেরপুরে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে করোনা

সীমান্ত জেলা শেরপুর। এই জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত ধরা পড়ে গত বছরের ৫ এপ্রিল। তখন থেকে এ বছরের মে মাস পর্যন্ত শেরপুরের করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও চলতি জুন মাস শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনই ভাঙ্গছে করোনা আক্রান্তের সকল রেকর্ড। অন্যান্য উপজেলায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সদরের অবস্থা নাজুক হয়ে উঠছে। এনিয়ে সদর উপজেলার সর্বত্র আতংক বিরাজ করছে। সব কিছু স্বাভাবিক থাকলেও গত ১১ জুন থেকে ২৪ পর্যন্ত শেরপুর পৌর এলাকার জন্য ৯ দফা কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি আছে।

শেরপুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে গতকাল ২০ জুন ছিল শেরপুর জেলায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা।এই দিন শেরপুর জেলায় ৬১ জন (পিসিআর ২৯+আরএটি৩২) আক্রান্ত হয়েছেন। ৬১ জনের মধ্যে সদর উপজেলাতেই রয়েছে ৫৫ জন। এর আগের দিন ১৯ জুন ৩৪ জনের মধ্যে সদরের আছেন ৩০ জন। ১৮ জুন পরীক্ষা হয়েছে তিন জনের এর মধ্যে সদরের একজন আক্রান্ত। ১৭ জুন ৪৯ জনে ৪৮ জন সদরে। ১৬ জুন ২৫ জন সদরে আক্রান্ত ২০ জন। ১৪ জুন ২৫ জনে মধ্যে ২৩ জন সদরে। ১ জুন থেকে ২০জুন পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩৮ জন।

সূত্র মতে, এই ৩৩৮ জনের মধ্যে ২৭৯ জনের বাড়ি সদর উপজেলায়। মে মাসে জেলায় মোট আক্রান্ত ছিল ৬৮ জন যার মধ্যে সদর উপজেলার আক্রান্ত ছিলেন ১৯ জন। এপ্রিলে এই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯ জন যার মধ্যে শেরপুর সদরের ১৭ জন। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, গত মে মাসে জেলায় আক্রান্তের শতকরা হার ছিল ১১.৪। আর এ মাসের ২০ দিনেই ওই সংখ্যা দ্বিগুনের বেশী। জুন মাসের মোট আক্রান্ত হিসাবের বিবেচনায় সদর উপজেলাতে (উপজেলা ভিত্তিক) শতকরা ৮২ ভাগ রোগী সদর উপজেলার। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে এত সংখ্যক রোগী হাসাপাতালে কখনও ভর্তি হয়নি যত এই জুন মাসে ভর্তি হয়েছে। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই শর্দি জ্বর রোগীর খবর পাওয়া গেছে কিন্তু পরীক্ষার আওতায় আসছে খুব কম। শর্দি জ্বর আক্রান্ত রোগীরা মিশে যাচ্ছে মানুষের সাথে। সব মিলিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে শেরপুর সদরের করোনা রোগী।

সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালে অন্য রোগের কারণে ভর্তি হওয়া রোগীদের পরীক্ষা করলেই পাওয়া যাচ্ছে করোনার অস্তিত্ব। শেরপুরের পুলিশ, ব্যাংক, নিবন্ধন অফিসের বেশ কিছু কর্মকর্তা কর্মচারির শরীরে মিলেছে করোনার অস্তিত্ব। আক্রান্ত হয়েছেন এখানের কজন জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক। এর প্রেক্ষিতে বেশ কটি সরকারি অফিস লিখিত আদেশ জারি করেছে অফিসের সবার করোনা পরীক্ষা নিশ্চিত করতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে বেশ কিছু শিশু কিশোর ও যুবক রয়েছে। এনিয়ে শেরপুরের সর্বত্র করোনা আতংক বিরাজ করছে। সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোবারক হোসেন বলেছেন শেরপুর সদরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। না হলে অবস্থা ভয়াবহ হতে পারে।

জেলার সিভিল সার্জন একেএম আনওয়ারুর রউফ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, স্বউদ্যোগে পাড়ায় মহল্লায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।শেরপুরের করোনার বিষয়টি সরকারের উচ্চস্তরে আলোচনা হচ্ছে। দ্রুত কোন ব্যবস্থা করা হবে। তবে শেরপুর যেহেতু এখনও রেড জোনে পড়েনি সকল কিছু মাথায় নিয়েই ভাবা হচ্ছে কি করা যায়।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button