অর্থনীতিজাতীয়দুর্যোগলিড নিউজশিক্ষাঙ্গন

কালো পতাকা মিছিল নিয়ে বুয়েটে ভিপি নুর

বাংলাদেশ প্রকেৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে কালো পতাকা মিছিল নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন।

দুপুর দেড়টার দিকে কালো পতাকা মিছিল নিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেন ভিপি নুরুল হক নুর। এরপর তিনি বুয়েটে আন্দোলনরতদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। ভিপি নুর বলেন, আবরার ফাহাদ প্রথম নয়। ২০০২ সালে বুয়েটে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে, ঢাকা মেডিকেলে রাজীবকে হত্যা করা হয়েছে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দখলদারিত্ব চলছে। তারা জোর করে শিক্ষার্থীদের মিটিং মিছিলে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেছে ছাত্রসমাজের ঐক্যবদ্ধ থাকার। আমরা অনুভূতির জায়গা থেকে আপনাদের এখানে এসেছি মিছিল নিয়ে। আপনাদের যে দলবাজ প্রশাসন রয়েছে তারা একটি সন্তানের মৃত্যুর পরেও ঘটনাস্থলে আসতে পারে না। এর জবাবদিহি আপনারা নিশ্চিত করবেন। আমার আহ্বান থাকবে, আপনাদের দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আপনারা যেন এই আন্দোলন বন্ধ না করেন।

এর আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক সমাবেশে বক্তৃতা করেন ভিপি নুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন। সেখানে বক্তৃতায় ভিপি নুর বলেন, দেশবিরোধী সব চুক্তি বাতিল করতে হবে। যে চুক্তির বিরোধীতা করে আবরার খুন হয়েছেন সেটি দেশবাসী মেনে নেবে না। পাশাপাশি আবরার হত্যার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।

প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।

তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা। হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।

এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।

এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১০ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button