শিক্ষাঙ্গন

ক্ষুদে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ৩২ সেট প্রশ্ন

আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের এ পরীক্ষা ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে ৩২ সেট প্রশ্ন তৈরি ও গোপনীয়তা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি পরীক্ষা সংক্রান্ত এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা প্রশ্নপত্রের পাণ্ডুলিপি জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) প্রণয়ন করে থাকে। গত তিন বছর একাধিক সেট প্রশ্ন প্রণয়ন করা হলেও, এবার ৩২টি সেট প্রণয়ন করা হবে। সেখান থেকে লটারীর মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে ৮টি সেট। সেটগুলোর প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে সারাদেশে এ পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।

সভায় আট সেট প্রশ্ন তৈরির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলা হয়, প্রতিটি পরীক্ষার জন্য আট সেট প্রশ্ন প্রণয়ন করা হলে কোনো একটি প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে তা পরিবর্তন করে অন্য সেটে পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি থাকছে না। এর আগেও এ পরীক্ষার জন্য আট সেট প্রশ্ন প্রণয়ন করা হয়েছে। এ কারণে গত তিন বছর প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সভায় উপস্থিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জানান, আগামী নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া সমাপনী ও ইবতেদায়ী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন, কার্যাদেশ প্রদান, মুদ্রণ ও বিতরণের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। এতে নেপ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডসহ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেশকিছু কর্মকর্তা বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন।

সভায় নেপের পক্ষ থেকে ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নপত্র এনসিটিবি’র বিশেষজ্ঞ দ্বারা যাচাই-বাছাই করার প্রস্তাব দিলে তাতে সবাই সম্মতি দেন।

বিজি প্রেসের প্রতিনিধি জানান, আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে পান্ডুলিপি দেয়া হলে ২ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বরের মধ্যে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা সম্ভব হবে। প্রশ্নপত্র সুষ্ঠুভাবে বিতরণ ও আনুষঙ্গিক প্রস্তুতির জন্য প্রশ্নপত্র দুই দিন আগে সরবরাহের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

সভা শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এ পরীক্ষার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রে সবাইকে অধিকতর যত্নবান ও সাবধানতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, পরীক্ষা ও ফলাফল নিয়ে বেশকিছু দুর্নীতির অভিযোগের দায় সরকারকে নিতে হয়েছে। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে শুরু করে ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত সবাই সতর্কতার সঙ্গে ও আন্তরিকভাবে কাজ করলে এ ধরনের ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য পরীক্ষা পদ্ধতিকে কলুষমুক্ত করতে হবে। এ জন্য তিনি সবাইকে সর্তকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, আগামী ১৭ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় ইংরেজি পরীক্ষার মাধ্যমে সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা শুরু হবে। ১৮ নভেম্বর বাংলা, ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ২০ নভেম্বর প্রাথমিক বিজ্ঞান, ২১ নভেম্বর ধর্ম ও নৈতিকতা এবং ২৪ নভেম্বর গণিত পরীক্ষা নেয়া হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button