অর্থনীতি

বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ

গত অর্থবছরের তুলনায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি ১৪ শতাংশ ৭৬ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের (জুলাই-জুন) সময়ে পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি হয়েছে এক হাজার ৫৪৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ৮১৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বছরের ব্যবধানে পয়েন্ট টু পয়েন্টে ঘাটতি কমেছে ২৬৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার বা ১৪ শতাংশ ৭৬ শতাংশ। রপ্তানিতে আগের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি ও আমদানিতে কম প্রবৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। এ সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশ। আর আমদানি ব্যয় বেড়েছে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আলোচিত সময়ে ইপিজেডসহ রপ্তানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে তিন হাজার ৯৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে পাঁচ হাজার ৫৪৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে গত অর্থবছর শেষে দেশে বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় এক হাজার ৫৪৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৪ টাকা দরে) এক লাখ ৩০ হাজার ১৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাব ঋণাত্মক রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ ঋণাত্মক কমেছে। গত অর্থবছরের চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫২৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯৫৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আমদানি ব্যয় কমার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ চাঙ্গা ছিল গত অর্থবছরে।
গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ ছাড়া প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) উল্লেখযোগ্য অঙ্কে বেড়েছে। সব মিলিয়ে চলতি হিসাবে ঘাটতি কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোন ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সে হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। এদিকে আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বেতনভাতা বাবদ বিদেশিদের পরিশোধ করেছে এক হাজার ৫০ কোটি ডলার। আর এর বিপরীতে বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ৬৭৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবায় বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৭১ কোটি ৫০ খাল ডলার। যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল (ঘাটতি) ৪২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৈরি করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচিত সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ৪৫০ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে নিট এফডিআই বেড়েছে ৪২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। তবে এফডিআই বাড়লেও দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাপক হারে কমেছে। বর্তমান অর্থবছরের পুঁজিবাজারে মাত্র ১৭ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। যা তার আগের অর্থবছরে ছিল ৩৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বেড়েছে। অন্যদিকে আমদানি ব্যয় কমে আসায় বিদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে চাপ আরও কমে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button