জাতীয়লিড নিউজ

দুর্নীতি না হলে দেশ আরও বেশি উন্নত হতো: প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান আরও জোরদারের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেছেন, দুর্নীতিবাজ নিজের দলের হলেও ছাড় পাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার যেভাবে উন্নয়ন প্রকল্প নিচ্ছে তার প্রতিটি টাকা সঠিক ব্যবহার হলে এতদিনে দেশ আরও অনেক বেশি উন্নত হতো।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে নিউইর্য়কের হোটেল ম্যারিয়ট মারকুইসে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা কথা স্পষ্ট বলতে চাই, এই অসৎ পথ ধরে কেউ উপার্জন করলে তার অনিয়ম, উশৃঙ্খলতা বা অসৎ এ উপায় যদি ধরা পড়ে সে যেই হোক না কেন, আমার দলের হলেও ছাড় হবে না।’

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আরেকটা জিনিস আমি দেখতে বলে দিয়েছি- সেটা হলো কার আয়-উপার্জন কত? কীভাবে জীবনযাপন করে? সেগুলো আমাদের বের করতে হবে।’

‘তাহলে আমরা সমাজ থেকে এই ব্যাধিটা, একটা অসম প্রতিযোগিতার হাত থেকে আমাদের সমাজকে রক্ষা করতে পারবো, আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারবো।’

দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান বিভিন্ন অভিযানের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এখন আমাকে খুঁজে বের করতে হবে এখানে কোথায় ফাঁকফোকর, কোথায় ঘাটতিটা, কারা কোথায় কীভাবে এই জায়গাটা ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’

‘সমাজের এই যে বৈষম্য এটা দূর করার জন্য এরইমধ্যে আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা পদক্ষেপ নিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান সেটাও অব্যাহত থাকবে। এই মাদক একটা পরিবার ধ্বংস করে, একটা দেশ ধ্বংস করে। এর সঙ্গে কারা আছে সেটাও আমরা খুঁজে বের করবো।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক দূর করে বাংলাদেশের মানুষকে আমরা উন্নত জীবন দিতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে শুধু না আন্তর্জাতিক পর্যায়েও জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এটা একটা সমস্যা। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা সৎভাবে জীবনযাপন করতে চায়, তাদের জন্য বা তাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য এ জীবনযাপনটা কঠিন হয়ে যায়, যখন অসৎ উপায়ে উপার্জিত পয়সায় সমাজকে বিকলাঙ্গ করে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘একজন সৎভাবে চলতে গেলে তাকে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে চলতে হয়, আর অসৎ উপায়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে এই ব্র্যান্ড, ওই ব্র্যান্ড, এটা সেটা হৈ চৈ,… খুব দেখাতে পারে। ফলাফলটা এই দাঁড়ায় একজন অসৎ মানুষের দৌরাত্বে যারা সৎ জীবনযাপন করতে চায় তাদের জীবনযাত্রাটাই কঠিন হয়ে পড়ে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছেলে-মেয়েরা ছোট শিশু, তারাতো আর এতটা বোঝে না, ভাবে যে ওরা এই ভাবে পারে তো আমাদের নাই কেন। এটা স্বাভাবিক তাদের মনে এই প্রশ্নটা জাগবে। ওত ছোট ছোট বাচ্চারা, তারা সৎ-অসৎতের কী বুঝবে?’

তিনি বলেন, ‘তারা (শিশুরা) ভাবে আমার বন্ধুদের এত আছে, আমাদের নাই কেন? স্বাভাবিক ভাবে মানুষকে অসৎ উপায়ের পথে ঠেলে দেবে।’

প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।

অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া প্রবাসীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৭৩তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্লোগান দেয়।

এর আগে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতিয়েরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তিনি জাতিসংঘের ৭৪তম অধিবেশনে ভাষণ দেন।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এখন নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button