অর্থনীতি

ফের রাস্তায় নামল বিনিয়োগকারীরা

প্ররধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পর কিছুদিন বিক্ষোভ বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার ফের ‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ’র ব্যানারে ডিএসইর সামনে বিক্ষোভ করেন বিনিয়োগকারীরা।

দরপতনের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হলেও বিনিয়োগকারীরা যখন রাস্তায় নামেন ততক্ষণে বড় উত্থানের আভাস দিতে থাকে শেয়ারবাজার। বেলা ১১টার দিকে যখন বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নামেন তখন ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের তুলনায় ৮০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। দিনের লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচকের এ বড় উত্থান অব্যাহত থাকে।

এর আগে দরপতনের প্রতিবাদে দিনের পর দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করায় গত ২৭ আগস্ট ডিএসইর পক্ষ থেকে মতিঝিল থানায় জিডি করা হয়।

ওই জিডিতে বলা হয়, ২৭ আগস্ট আনুমানিক দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশ পুঁজিবাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ৯-১০ জন লোক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের সামনে ব্যানার ও মাইকসহ বিক্ষোভ মিছিল প্রদর্শন করে।

‘যার ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সম্মানিত সদস্যবৃন্দের, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াত এবং অফিসের স্বাভাবিক কর্যক্রম সম্পাদনে বিঘ্ন ঘটে।’

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সামনে বেশ কিছুদিন ধরে তারা এ ধরনের বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছে এবং পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে সম্মান হানিকর মন্তব্য করেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ মনে করে এ ধরনের কার্যকলাপ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। ফলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে- বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ দেশের প্রাচীন বৃহৎ পুঁজিবাজার। একটি জাতীয় ও জনস্বার্থমূলক প্রতিষ্ঠান হিসাবে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে দৈনিক এখানে হাজার হাজার লোকের আগমন ঘটে।

“অতএব, বিষয়টি বিবেচনা করে পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে মহোদয় সমীপে আর্জি এ ব্যাপারে আপনার থানায় একটি জিডি নথিভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাধিত করবেন।”

ডিএসইর পক্ষ থেকে এই জিডি করা হলে বন্ধ হয়ে যায় বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ। তবে শেয়ারবাজারে চলতে থাকে দরপতন। দরপতনের ধারা সম্প্রতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তবে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়নি।

এ পরিস্থিতিতে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) পক্ষ থেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আশ্বাস পাওয়া যায়। আশ্বাস অনুযায়ী বিনিয়োগও বাড়ায় আইসিবি। ফলে লেনদেনের শুরুতেই মূল্য সূচকের বড় উত্থানের আভাস দিতে থাকে।

এ পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বিক্ষোভ করে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। এই বিক্ষোভ থেকে বরাবরের মতো বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনের পদত্যাগ দাবি করা হয়।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরী বলেন, বিএসইসির এই চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে শেয়ারবাজার ভালো করা যাবে না। আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চায়। এ জন্য আজ আমরা আবার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button