জাতীয়রাজনীতিলিড নিউজ

অভিযোগ থাকলে বিএনপি নেতাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে: হানিফ

বিএনপির যারা দুনীতিগগ্রস্ত এবং যাদের বিরুদ্ধে দুনীতি ও অপকর্মের অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, আপনাদের এত খুশি হওয়ার কারণ নেই। আমরা অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। রোববার বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর কম্পিউটার কৌশল বিভাগ ‘পলিসি বেইজড চ্যালেঞ্জেস ফর দ্য ফোরথ ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আইইবির কাউন্সিল হলে আয়োজিত সেমিনারে হানিফ বলেন, পাশাপাশি এও বলে দিতে চাই আপনাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে, আপনাদের মধ্যে অনৈতিক কাজে যুক্ত আছে তাদেরও আইনের কাটগড়ায় দাঁড়াতে হবে এটাও মাথায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে; প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সে অভিযান অব্যাহত আছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের যে জিরো টলারেন্সনীতি এখানও অব্যাহত আছে এবং থাকবে। দুর্নীতি হতে পারে, অনৈতিক কাজ হতে পারে কিন্তু আমরা সেটাকে প্রশ্রয় দিচ্ছি কি না সেটা বিবেচ্ছ্য বিষয়। দুর্নীতিকে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্রয় দেননি, সরকারও প্রশ্রয় দিচ্ছে না।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, যে কারণে আজ কে দলের কে দলের নয় সেটা বিবেচনা করা হচ্ছে না। প্রতিটা অপরাধীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সামান্য একজন জুয়াড়ি, মদারু তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য সরকার এত অর্জন ম্লান হতে পারে না।

শেখ হাসিনা যে মেধা-শ্রমকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিছু অনৈতিক মানুষের জন্য তা ম্লান হতে পারে না। প্রয়োজনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরও কঠোর হব। এরপরও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করা হচ্ছে অভিযোগ করে হানিফ বলেন, বিশেষ করে আমাদের বিএনপির ভাই-বোনের মধ্যে যারা আছেন তারা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তো বলেই বসলেন যে, ‘সরকার ব্যর্থ তাদের উচিত পদত্যাগ করা।’ আমার প্রশ্ন হল- কীসের ভিত্তিতে ব্যর্থ ভাই? এই ক্যাসিনোর জন্য ব্যর্থ? নাকি অন্যকিছু? কোনটা?’ প্রশ্ন রাখেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিনি আরও বলেন, আমি এর আগেও বলেছি স্বাধীন বাংলাদেশে আইন করে মদ জুয়া হাউজি বন্ধ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরবর্তীকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্যাসিনো চালু করেন।

১৯৭৭ রফতানি মেলা করে জুয়া হাউজি এবং লাকী খানের নৃত্য এখানে চালু করেছিলেন। এ কথা আপনি ভুলে গেলেও জাতি ভুলেনি। এই দেশে যদি অনৈতিক কাজের হোতা থাকে তাহলে সেটা তারেক রহমান। বিএনপির আমলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর যাকে বলা হতো ক্যাসিও বাবর তাকে বানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত।

জি কে শামীমের পরিচয় তুলে ধরে হানিফ বলেন, জি কে শামীম কে? জি কে শামীম তো মির্জা আব্বাসের হাত দিয়েই উঠে এসেছে। তিনি যখন পূর্তমন্ত্রী ছিলেন তখনই জি কে শামীমের উত্থান হল। এখন যখন ধরা পড়েছে তখন বিএনপি নেতারা বলছেন তাকে চিনেন না। জি কে শামীমের যে ডায়রি পাওয়া গেছে সেখানে কাকে কত টাকা দেন তা আজ আমরা একটি অনলাইন গণমাধ্যমে জানতে পেলাম।

জি কে শামীম নিয়মিতভাবে টাকা দিতেন তিন শীর্ষ নেতাকে। তবে তারমধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলামের নাম পাওয়া গেছে। বিএনপির আরও অনেক নেতা আছে। আপনার সব জায়গাতেই আছেন। তারেক রহমান বাংলাদেশে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল এমন দাবি করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, হাওয়া ভবন, খোয়াব ভবন তৈরি করে কী যে দুর্নীতি করেছে, তা দেশের মানুষ দেখেছে। তাদের নেতৃত্বেই এই ক্লাবগুলোতে মদ-জুয়া শুরু হয়েছিল।

আজ তারা বলছে অন্য কথা। কিন্তু ভেবে দেখেন আপনার দলের নেতা খালেদা জিয়া, দলের শীর্ষ নেতা তারেক রহমান কী পরিমাণের দুর্নীতি করেছে। আমাদের ধন্যবাদ জানানো উচিত যে, আমরা এই অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে একশন শুরু করেছি।

আমরা অপরাধীদের আইনের আওতায় এনেছি। তিনি আরও বলেন, সুযোগ বুঝে হয়তো কেউ যুবলীগে ঢুকে পরেছিল কিন্তু আমরা ছাড় দেইনি। আমাদের কাছে যখনেই তথ্য এসেছে তখনই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর প্রেসিডেন্ট ও আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক, ড. শেখ আনোয়ারুল ফাত্তাহ এবং বিশিষ্ট তথ্য প্রযুক্তিবিদ সুফি ফারুক ইবনে আবু বকর।

এ ছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েট কো-অর্ডিনেটর, (সিআরআই) প্রকৌশলী তন্ময় আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন আইইবি’র কম্পিউটারকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান এবং কানাডিয়ান ইউনির্ভাসিটি অফ বাংলাদেশ-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। সমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button