সারাদেশ

ফুলবাড়ীতে আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

ফুলবাড়ী(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর কৃষকরা। আগাম আলু আবাদে লাভ হওয়ায় কৃষকরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। উপজেলার উঁচু ও ডাঙ্গা সব জমিতেই বর্তমানে আলু চাষের কাজ চলছে। কেউ জমি তৈরি করছেন, কেউবা শ্রমিক নিয়ে খেতে আলু লাগাচ্ছেন। এই জনপদের কৃষকরা আগাম জাতের হিরা-২, ব্রি-৩৩, ব্রি-৩৯, ব্রি-৫৬ ও বীনা-৭ জাতের ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। ফলে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন এখানকার কৃষকরা। উপজেলার শিবনগর,খয়েরবাড়ী,আলাদিপুর,বেতদিঘী,কাজিহাল প্রভৃতি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে জমিতে আলু লাগানোর জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন এই এলাকার কৃষকরা। এ বছর আলু বীজের দাম তুলনামূলকভাবে কম, সারের সরবরাহ স্বাভাবিক ও স্বল্প মজুরিতে কৃষি শ্রমিক মেলায় উপজেলার কৃষকরা আগাম জাতের আলু আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন।
শিবনগর ইউনিয়নের ঘাটপাড়া গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন বলেন, বাজারে যার আলু যত আগে উঠবে, তার লাভ তত বেশি হবে। তাই আগে-ভাগেই আলু আবাদ করছি। খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের লালপুর গ্রামের কৃষক সাবেদ আলী জানান, বিঘা প্রতি জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণে খরচ হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। বিঘায় আলু উৎপাদন হবে প্রায় আড়াই হাজার কেজি। আগাম আবাদে আগাম বাজার ধরতে পারলে আলুর কেজি বিক্রি হবে প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এতে বিঘা প্রতি আলু বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়ে লাভ পাওয়া যাবে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। তাছাড়া ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে আলু খেত থেকে তোলা যায় বলে এ আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেশি। গ্রামাঞ্চলে কৃষিকাজ না থাকায় বেকার থাকতে হতো শ্রমিকদের। কিন্তু দিনাজপুর ফুলবাড়ীতে আগাম আলু চাষ হওয়ায় কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের হড়হড়িয়াপাড়ার কৃষি শ্রমিক শাহজাহান আলী জানান, আগে বেকার থাকতে হতো আর এখন আলু খেতে কাজ করে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা মজুরি পাওয়া যাচ্ছে। একই কথা জানালেন আরও কয়েকজন শ্রমিক।এলাকাবাসী জানায়, এই উপজেলার জমিগুলোতে ধান কাটা শেষ হলে কিছু দিন পড়ে থাকতো নভেম্বর এর দিকে আলু চাষ করতো বর্তমান যাদের আমন আগুর ধান কাটা হয়েছে তারা সেই জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ দিচ্ছে। এই অঞ্চলের ফুলবাড়ী উপজেলাসহ আশপাশের এলাকায় আগাম আলু চাষাবাদ করা হয়। এলাকার কৃষকরা আলু উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে থাকেন। এতে অন্যান্য ফসলের যে লোকসান হয় কৃষকের তা তারা পুষিয়ে নেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এটিএম হামিম আশরাফ বলেন, উপজেলায় এবার ১৭ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। উপজেলার কোথাও কোথাও জমির আগাম জাতের ধান কাটা হচ্ছে। বর্তমানে উপজেলার কিছু এলাকার কৃষকরা আগাম জাতের আলু আবাদে নেমে পড়েছেন অক্টোবরের শুরুতেই আগাম জাতের আলু,ফুল কপি,বাধা কপি চাষ পুরোদমে শুরু হবে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা আগাম আলু চাষে ভাল ফলনের আশা করছেন। এই আগাম জাতের আলু বিদেশে রপ্তানি করে কৃষকরা আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে সেজন্য সচেতনমহল সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button