তিতা চিরতার মিঠা গুণ…..
চিরতা চেনেন না এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোণা। আর এর নাম শুনলেই বেশিরভাগ মানুষ ভ্রু কুঁচকে ফেলেন। আর তার মূল কারণ হলো এর তিতকুটে স্বাদ। বহুকাল থেকেই বিভিন্ন রোগে এই গাছ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে চিরতার শিকড় সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
চর্ম রোগ ও জ্বর সারাতে কাজ করে এটি। এছাড়াও হেপাটাইটিস, ডায়াবেটিস, ম্যালেরিয়া জ্বর, অ্যাজমার মতো কঠিন রোগের চিকিৎসায় চিরতার ব্যবহার করা হয়। চলুন উপকারী এই ভেষজ উদ্ভিদের গুনাগুণ ও ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিই-
অ্যালার্জি সারাতে:-
চুলকানির সমস্যা থাকলে সেই জায়গা ফুলে লাল হয়ে যায়, ত্বকে দাগ পড়ে। এই সমস্যা সমাধানে চিরতা ব্যবহার করতে পারেন। রাতে ৪/৫ গ্রাম শুকনো চিরতা এক গ্লাস গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন ছেঁকে এই রস পান করুন। এতে অ্যালার্জির সমস্যা দূর হবে। তবে সে সঙ্গে অ্যালার্জি সৃষ্টি হয় এমন খাবার যেমন পুঁইশাক, চিংড়ি, বেগুন, ইলিশ ইত্যাদি গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
হাঁপানি উপশম:-
যাদের হাঁপানি সমস্যা রয়েছে কিংবা ঠান্ডা লাগলে বা ঋতু পরিবর্তন হলে হাঁপানি বেড়ে যায় তারা আধা গ্রাম চিরতার গুঁড়োর সঙ্গে মধু মিশিয়ে ৩ ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধুসহ চেটে খাবেন। ২/৩ দিনের মধ্যে হাঁপানি কমে যাবে।
কৃমি সারাতে:-
পেটে কৃমি হলে ওপরের অংশ মোচড়ায়, ব্যথা করে। এই সমস্যা হলে আধা গ্রাম চিরতার গুড়োর সঙ্গে মধু বা চিনি মিশিয়ে রোজ সকালে খাবেন। এতে কৃমির উপদ্রব কমে যাবে।
চুলকানি সমস্যায়:-
গায়ে চুলকানি হলে ব্যবহার করতে পারেন চিরতা। ২০ গ্রাম চিরতার সঙ্গে সামান্য পানি ছিটিয়ে বেঁটে নিন কিংবা ছেঁচে নিন। এরপর লোহার কড়াই বা তাওয়াতে ১০০ গ্রাম সরিষার তেল দিয়ে জ্বাল দিন। ফেনাযুক্ত হলে তাতে চিরতা দিতে হবে। ভালো করে ভেজে ছেঁকে নিন। খেয়াল রাখবেন যেন চিরতা পুড়ে না যায়। চুলকানি আক্রান্ত স্থানে এই তেল মালিশ করলে চুলকানি সমস্যা দূর হয়।
চুল ওঠা বন্ধ করে:-
চুল ওঠা সমস্যায় নাজেহাল? ব্যবহার করুন চিরতা। রাতে এক কাপ গরম পানিতে ৫ গ্রাম চিরতা ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সেই পানি ছেঁকে তা দিয়ে মাথা ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল ওঠা কমবে।
এছাড়াও ডায়াবেটিস, রক্তশূন্যতা, হৃদরোগসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় এটিকে উপকারী পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়।