রংপুর বিভাগসারাদেশ

নদীর বালুতে দু’বছর যাবত অনাবাদী কয়েকশ একর জমি

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে চাঁড়ালকাঁটা নদী খননের উত্তোলনকৃত বালু দু’বছর যাবৎ ফসলি জমিতে ফেলে রেখে ব্যবসা করা হচ্ছে। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ব্যবসায়ীরা ২০ থেকে ২৫ টি পয়েন্টে অবৈধভাবে প্রতিদিন বালু উত্তোলন করছে। বালু বোঝাই ট্রলিগুলোও ফসলি জমির উপর দিয়েই করছে চলাচল। এতে করে নদী পাড়ের কয়েক’শ একর ফসলি জমি অনাবাদী হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে হাজার হাজার কৃষক। এছাড়া বালু বোঝাই ট্রলি যাতায়াতের ফলে গ্রামীণ সড়কগুলো চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সৈয়দপুর ডিভিশন অফিস সুত্রে জানা গেছে, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওই নদীর নীলফামারী জেলার ২৫ কিলোমিটার অংশে নদী খননের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ঠিকাদার বোমা মেশিন দিয়ে নদী খনন করছে। গত দু ‘বছর ধরে নদী খননের বালু অপসারন না করায় নদী পাড়ের কয়েকশ আবাদি জমিতেই ফেলে রাখা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় মোট আবাদী জমির পরিমান ১৫ হাজার ৫শ ১৮ হেক্টর। নদী খননের ফলে শুধু কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৫০ একর জমি গতিক দু বছর ধরে অনাবাদি রয়েছে। দু বছরে কৃষকরা ওই জমিগুলোতে ধান ভুট্রা সহ বিভিন্ন ফসল চাষ করতো। জমিগুলো অনাবাদি থাকায় বছরে কৃষকের ক্ষতি প্রায় কোটি টাকার মতো।
সরেজমিনে উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চাঁড়ালকাঁটা নদীর দু’পাশে কৃষকের আবাদী জমিতে নদী খননের বালু রাখা হয়েছে। এসময় আসগর আলী নামের এক কৃষক বলেন, ঠিকাদার আমার আড়াই বিঘা ধানি জমিতে খননের বালু উত্তোলন করে ফেলে রেখেছে। গত দু বছর ধরে ওই জমিতে চাষাবাদ করতে না পেরে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। আমিনুর রহমান নামের আরেক কৃষক বলেন, নদী খননের বালু আমাদের পৈর্তিক জমিতে ফেলা হয়েছে। অথচ সেই জমির বালু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আয় করছে। আর আমরা ধান চাষ করতে না পেরে অভাবের তাড়নায় দিন কাটাচ্ছি।
নীলফামারীর কৃষি দপ্তরের উপ পরিচালক ওবায়দুর রহমান বলেন, খননের মাধ্যমে পলি অপসারন করে নদী এবং খালের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারী উদ্দ্যোগ অত্যন্ত ফলপ্রসু। এতে কৃষি লাভবান হবে। কিন্তু কৃষকের যেন ক্ষতি না হয় সেজন্য সকলের দৃষ্টি রাখা উচিত।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সৈয়দপুর ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এবং কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, খুব দ্রুত নদী খননের বালু অপসারনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য নীলফামারী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button