স্বাস্থ্য

অতিরিক্ত ঘেমে যাচ্ছেন? কারণ…

সবাই কম-বেশি ঘামে। কিন্তু আপনি কি বাকি সবার চাইতে একটু বেশিই ঘামছেন? কেন? জেনে নিন অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়ার কিছু সম্ভাব্য কারণ-

ফোকাল হাইপারহাইড্রোসিস:-

সাধারণত, ঘেমে যাওয়ার ধরণ দুই রকম হয়ে থাকে। ফোকাল ও জেনারেলাইজড। ফোকাল হাইপারহাইড্রোসিস বলতে মূলত শরীরের নির্দিষ্ট কোন একটি স্থানে অনেক বেশি ঘেমে যাওয়াকে বোঝায়। সাধারণত, পা, হাত, আঙ্গুল, চেহারা ইত্যাদি স্থানে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।

ব্যাপারটি সাধারণ হলেও কোনো কারণ ছাড়াই অনেক বেশি পরিমাণে শরীর এভাবে ঘেমে গেলে সেক্ষেত্রে ব্যাপারটি চিন্তার কারণ হতে পারে। কেন এমন হয় তা এখনো জানা যায়নি। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের শরীরে কোনো পরিবর্তনই আসে না। তাই এই সমস্যার কারণ হিসেবে বংশগত সমস্যাকেই দায়ী করা হয়।

গর্ভধারণ:-

গর্ভধারণের কারণে শরীরে নানারকম পরিবর্তন আসতে পারে। আর এমন একটি পরিবর্তন হলো অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া। এটি একেবারেই স্বাভাবিক। কারণ, এসময় শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। হরমোনের পরিবর্তন আসে। তাই মানুষ ঘেমে যেতেই পারে।

হাইপারএকটিভ থাইরিয়েড:-

খুব সহজ ব্যাপার। এক্ষেত্রে, আমাদের শরীরের থাইরয়েড গ্রন্থি স্বাভাবিকের চাইতে বেশি কাজ করে। অনেক বেশি পরিমাণে মেটাবলিক হরমোনস থাইরক্সিন এবং ট্রাই-আয়োডোথাইরোনাইন উৎপন্ন করে। আপনার শরীরের কাজগুলো সঠিকভাবে করার জন্য এই হরমোনের প্রয়োজন পড়ে। তবে পরিমাণটা অনেক বেশি বেড়ে গেলে সেক্ষেত্রে ওজন কমে যাওয়া, ঘেমে যাওয়া, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

নির্দিষ্ট কিছু খাবার:-

নির্দিষ্ট কিছু খাবার গ্রহণ করলে সেটার ফলাফল হিসেবে আমাদের শরীর অতিরিক্ত ঘেমে যেতে পারে। এটি খুব বেশি অস্বাভাবিক কিছু না। অনেকসময় এই খাবারের প্রকার ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে, আবার একও হতে পারে।

ওষুধ:-

নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের কারণে শারীরিক পরিবর্তন এবং সেখান থেকে অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়ার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে, ব্যাথানাশক ওষুধ, হরমোনের ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক ইত্যাদি গ্রহণের ফলে এমনটা হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাক:-

হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ঘেমে যাওয়াকে ধরা হয়। এসময় ঠাণ্ডা ঘাম তৈরি হয় শরীরে। সাথে থাকে বুক ব্যথা, মাথা ঘোরা এবং শরীরের বাম পাশে অস্বস্তি বোধ করা ইত্যাদি সমস্যাগুলোও।

ডায়াবেটিস:-

আপনার অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়ার কারণ হতে পারে ডায়াবেটিসও। সাধারণত, এক্ষেত্রে নিন্ম রক্তচাপ, সিস্টেম ড্যামেজ এবং নিউরোপ্যাথির কারণেও এমনটা হয়ে থাকে। এই সমস্যাগুলো আমাদের শরীরের গ্রন্থিতে চাপ প্রয়োগ করে এমং ঘামের জন্ম দেয়।

মানসিক চাপ:-

কখনো খুব মানসিক চাপে পড়লে শরীর ত্বকের মাধ্যমে পানি বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় অন্যান্য গ্রন্থিতে খুব একটা চাপ পড়ে না। শরীর কিডনিতে পানি প্রদান করাই বন্ধ করে দেয়। এর বদলে শরীর অনেক ঘেমে যায়। তাই মানসিক চাপে থাকার সময় অতিরিক্ত ঘেমে গেলে ব্যাপারটি নিয়ে চিন্তা করবেন না।

হরমোন:-

হরমোন মানুষের ঘেমে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে। শরীরে হরমোনের তারতম্য এক্ষেত্রে প্রভাব রাখে। হরমোনের প্রভাবে, বিশেষ করে এস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বদলে গেলে সেক্ষেত্রে একজন মানুষ অনেক বেশি ঘেমে যেতে পারেন।

তবে, ঘেমে গেলে সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে, অবহেলা করবেন না। পরিমাণমতো পানি পান করুন। কারণ, ঘামের কারণে আপনার শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়তে পারে। পানিশূন্যতা থেকে বাঁচতে এক্ষেত্রে দরকারি ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। একইসাথে এই সমস্যা অনেক বেশি সময় ধরে চলতে থাকলে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button