আন্তর্জাতিক

ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দামে ব্যাপক ধস, কেজি ৬ থেকে ১০ রুপি

ভারতে পেঁয়াজের বাজারে ধস নেমেছে। সর্বকালের সবচেয়ে কম দামে পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে দেশটিতে। গতকাল লাসাগাঁও অনলাইন মার্কেটে কেজিপ্রতি পণ্যটি ৬ থেকে ১০ রুপি দরে বিক্রি হয়েছে। সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর

ন্যায্য মূল্য না পেয়ে দেশটির কৃষকরা এখন রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে কেন্দ্রকে চাপ দিচ্ছেন। এদিকে কৃষকের চাপে কর্ণাটকে উৎপাদিত পেঁয়াজের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারত। প্রতি চালানে সর্বোচ্চ ৯ হাজার মেট্রিক টন রপ্তানি করা যাবে বেঙ্গালুরু পেঁয়াজ। দেশটির হর্টিকালচার কমিশনারের অনুমতি নিয়ে চেন্নাই সমুদ্রবন্দর দিয়ে এ পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে। জানা গেছে, কর্ণাটকের গোলাপি জাতের বেঙ্গালুরু পেঁয়াজ বাজারে চলে আসায় স্থানীয়ভাবে পণ্যটির দাম কমতে শুরু করেছে।

ফলে ব্যবসায়ীরা তাদের রাজ্য সরকারকে চাপ দিচ্ছেন, যাতে করে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া, মহারাষ্ট্রে নির্বাচনও শেষ হয়ে গেছে। ফলে এ মুহূর্তে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা রাখার আর কোনো যৌক্তিক কারণ দেখছেন না ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।

২৮ অক্টোবর ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা এক আদেশে শুধু কর্ণাটক রাজ্যে উৎপাদিত ‘বেঙ্গালুরু গোলাপি পেঁয়াজ’ রপ্তানির অনুমতি দেয়। এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর এক আদেশে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। এরপর থেকেই বাংলাদেশে পণ্যটির দাম বাড়তে থাকে দফায় দফায়। শেষ পর্যন্ত গতকাল পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম কেজি প্রতি ১১০ থেকে ১১৫ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণায় পেঁয়াজের দাম দু-চার দিনের মধ্যে কমে আসবে বলে জানিয়েছেন খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘কর্ণাটকি পেঁয়াজের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, অন্যান্য রাজ্যের পেঁয়াজেও দ্রুত এলসি খোলা যাবে বলে ভারতের রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন। আশা করছি ২ নভেম্বরের মধ্যে নতুন এলসি শুরু হবে। আমদানি করা মাল সীমান্ত দিয়ে আসতে শুরু করলেই দ্রুত বাজারে দাম কমে যাবে।’ আমদানিকৃত পেঁয়াজ না আসার কারণেই গত তিন-চার দিনে পণ্যটির দাম বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা আরো জানান, কর্ণাটকের পাশাপাশি ভারতের অন্যান্য রাজ্যের কৃষক ও ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে কেন্দ্রকে চাপ দিচ্ছেন। তারা শুধু একটি রাজ্য থেকে পেঁয়াজ রপ্তানির এই আদেশে ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে এশিয়ার পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় বাজার লাসাগাঁওয়ের চাষিরা পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছেন।

লাসাগাঁও এগ্রিকালচার প্রডিউস মার্কেট কমিটির সভাপতি সুভর্না জগতাপ সম্প্রতি দেশটির ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে বলেছেন, বিভিন্ন রাজ্য থেকে পেঁয়াজ আসা শুরু হওয়ায় পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম দ্রুত কমছে। যে কারনে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। এখনই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এবং গুদামজাতের পরিমাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে না নিলে কৃষকরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এদিকে ভারতের পাশাপাশি মিসর ও তুরস্ক থেকে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ নিয়ে তিনটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের পথে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button