বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

মার্কিন নির্বাচন নিয়ে জুকারবার্গের চাঞ্চল্যকর অডিও ফাঁস

ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জুকারবার্গের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। তাতে জুকারবার্গকে বলতে শোনা গেছে, মার্কিন সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করবে ফেসবুক। তবে ফেসবুকের পক্ষ থেকে কোনো পছন্দের প্রার্থী নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের কর্তাব্যক্তির এ ধরনের মন্তব্য অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। তার চেয়েও বড় বিষয় হলো, তার এ ধরনের চিন্তাধারার ফলাফল সুদূরপ্রসারী।

চলতি বছরের জুলাইয়ে ফেসবুকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বের ওই অডিওতে মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন, এলিজাবেথ ওয়ারেনের মতো কেউ মনে করেন যে, ফেসবুক ভেঙে দেওয়া দরকার। আমি মনে করি যে, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে যান, তাহলে আমি বাজি ধরে বলতে পারি আমাদের আইনি লড়াইয়ে যেতে হবে, এবং আমি মনে করি যে, আমরা আইনি লড়াইয়ে জিতব।

তিনি আরো বলেন, আমি বলতে চাইছি যে, আমি আমাদের নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ঝামেলায় জড়াতে চাই না। আমি বোঝাতে চাইছি যে, এখানে থেকে এ ধরনের অবস্থান ঠিক নয়, আপনারা জানেন, আমি বলতে চাচ্ছি … এটা অনেকটা এরকম, আমরা আমাদের দেশের ব্যাপারে যত্নশীল, এবং আমাদের নিজেদের সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাই এবং ভালো কিছু করতে চাই। কিন্তু দেখুন, দিনশেষে কেউ যদি অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলার চেষ্টা করে, তাহলে তো আপানাকে লড়াই করতেই হবে।

যদিও ফাঁস হওয়া ওই অডিওতে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহীকে বলতে শোনা গেছে, ফেসবুকের পছন্দের কোনো প্রার্থী নেই। তবে এলিজাবেথ ওয়ারেন প্রেসিডেন্ট হলে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করবে ফেসবুক।

মার্কিস প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য ভার্জ ওই অডিও প্রকাশ করেছে। তাতে জুকারবার্গের চিন্তার গভীরতা প্রকাশ হয়েছে। তাতে জুকারবার্গ বলেছেন, এলিজাবেথ ওয়ারেনের মতো কেউ মনে করেন যে, ফেসবুক ভেঙে দিতে হবে। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে যান, তাহলে আমি বাজি ধরে বলতে পারি যে, আমাদের আইনি লড়াইয়ে যেতে হবে, এবং আমরা আইনি লড়াইয়ে জিতব।

জুকারবার্গের এ ধরনের মন্তব্য ওয়ারেন এর নজরে পড়েছে। এক টুইট বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ফেসবুকের মতো দানবীয় সংস্থা অনৈতিক চর্চা করছে। এসব ঠিক করা দরকার।

পরে মঙ্গলবার বিকেলে ওয়ারেন জানান, বড় ধরনের এসব প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়ার পরেও সবাই বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া নিজেদের কুকুরের ছবিও শেয়ার করা যাবে।

এক টুইট বার্তায় তিনি আরো বলেন, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম আপনার গোপনীয়তা রক্ষার জন্য একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে তারা বিভিন্ন ধরনের তথ্য দিয়ে আপনার তথ্য চুরি করে নিচ্ছে। এমনকি আপনার তথ্য অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছে, ভুল তথ্য দিয়ে আপনাদের ডুবিয়ে রাখছে এবং আমাদের নির্বাচনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে।

তবে ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ওয়াশিংটন ডিসিতে বৈঠক ভালোভাবে হয়েছে। ভবিষ্যতে ইন্টারনেটের নীতিমালা সম্পর্কে উদ্বেগের বিষয়গুলো তারা জানিয়েছেন। গত মাসে ট্রাম্প একটি ছবি দিয়ে টুইট করেন। তাতে দেখা যায়, হোয়াইট হাউসে ফেসবুক সিইওর সঙ্গে তিনি করমর্দন করছেন।

এর আগে গত মার্চে ডেমোক্রেটিক সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন জানান, সে দেশে ফেসবুক, অ্যামাজন, গুগল, অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেছিলেন, আমি এমন একটি সরকার চাই, যা সবার চাওয়া নিশ্চিত করবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ এবং সবচেয়ে ক্ষমতাধর কম্পানিও সরকারি আইনে পরিচালিত হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button