অমিতের সময় চিদম্বরম গ্রেপ্তার, চিদম্বরমের সময় অমিত
দিল্লির রাজনৈতিক মহলে ক্ষমতার বদলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটছে। চিদম্বরম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন ভুয়া সংঘর্ষ মামলায় অমিত শাহকে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। তার ঠিক ১০ বছর পর গ্রেপ্তার হলেন চিদম্বরম। আর এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চেয়ারে অমিত।
মনমোহন সিং সরকারের ১০ বছরের মেয়াদে অত্যন্ত প্রভাবশালী মন্ত্রী ছিলেন পি চিদম্বরম। ২০০৫ সালে সোহারাবুদ্দিন শেখকে পুলিশ হেফাজতে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ ওঠে। ওই সময়ে গুজরাটের স্বরাষ্ট্র দপ্তর ছিল অমিত শাহর অধীনে। সোহরাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে তখন ৬০টি মামলা ঝুলে ছিল। অভিযোগ ওঠে, অমিতের অনুমতি পেয়ে ভুয়া সংঘর্ষের ঘটনা সাজিয়ে সোহরাবুদ্দিনকে খুন করা হয়েছিল।
২০১০ সালের জানুয়ারিতে মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তার ঠিক ৬ মাস পর জুলাইয়ে অমিত শাহকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা। তখন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। গুজরাট হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন অমিত। কিন্তু আপত্তি তুলে সিবিআই জানিয়েছিল, রাজনৈতিক ক্ষমতা খাটিয়ে প্রমাণ নষ্ট বা সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন তিনি। অক্টোবরে অমিত শাহকে জামিন দেয় গুজরাট হাইকোর্ট। পরের দিন সিবিআইয়ের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিচারপতি নির্দেশ দেন, গুজরাটে থাকতে পারবেন না অমিত শাহ। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত নিজের রাজ্যে ঢুকতে পারেননি বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তখন অমিত শাহ অভিযোগ করেছিলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিবিআই দিয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে কংগ্রেস।
তারপর সবরমতি নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। বদলে গিয়েছে ভারতীয় রাজনৈতিক ক্ষমতার ভরকেন্দ্র। ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্রের মসনদে নরেন্দ্র মোদী। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার আস্থাভাজন অমিত শাহ। আইএনএক্স মিডিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে পি চিদম্বরমকে গ্রেফতার করল সিবিআই। আপাততভাবে দুটি মামলাতে কোনো মিল নেই। শুধু একটাই মিল, খালি বদলে গিয়েছে পাত্র। সেদিন অমিত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছিলেন। আজ সেই একই অভিযোগ করলেন পি চিদম্বরম।