আন্তর্জাতিক

তারা জ্ঞান ফেরাতে বৈদ্যুতিক শক দেয় মুখে মাটি গুঁজে দিতো: কাশ্মীরে নির্যাতন

‘আমি ওদের বলেছিলাম, আমাদের পেটাবেন না, গুলি করুন। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম যে তারা যেন আমাকে গুলি করে। কারণ তাদের নির্যাতন ছিল সহ্যের বাইরে’- নির্যাতিতদের ভাষায় এভাবেই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দিদের মর্মস্পর্শী চিত্র ফুটে ওঠে।

এক মাস আগে রাজ্যটির স্বায়ত্বশাসন তুলে নেওয়ার পর এসব ঘটছে। সেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষও ঘটে। বন্দিদের কেউ কেউ ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন। বিতর্কিত এই সিদ্ধান্ত আরোপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এসব শুরু হয়ে যায়। গ্রামবাসীরা বলেছেন । যারা কথা বলেছেন তারা নিজিদের পরিচয় প্রকাশের আতঙ্কে ছিলেন।

ভুক্তভোগীরা ভারতীয় সেনাদের সম্পর্কে বলেন, কারা লাথি মারে। রড ও তার দিয়ে পেটয় এবং বৈদ্যুতিক শকও দেয়।

একজন বলছেন, আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমাদের অপরাধ কী? তারা কিছুই শুনতে চাইছিল না, শুধু পিটিয়েই যাচ্ছিল। তারা আমার শরীরের প্রতিটি অংশে পিটিয়েছে। আমরা অচেতন হয়ে গেলে আমাদের চেতনা ফেরাতে বৈদ্যুতিক শকও দেয়। তারা আমাদের মুখে মাটি গুঁজে দিতো। তারা বলতো চেঁচিও না। কেন চেঁচাচ্ছো?

সেনাবাহিনী বলছে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এর কোনো প্রমাণ নেই। বেসামরিক নাগরিকদের সাতে কোনো জবনদস্তি করা হয়নি। নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে। ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি পেশাদার সংস্থা যারা মানবাধিকার বোঝে এবং রক্ষা করে।

ভিডিও’তে এক ব্যক্তির কথা বলা হয় যিনি তার দেহের আঘাতের চিহ্ন দেখিয়েছেন। ওই ব্যক্তি জানান, এগুলো নির্যাতনের কারণে হয়েছে। আরো বলেন, তার আমার দাড়ি ধরে এতো জোরে টানছিল যে আমার মনে হচ্ছিল, আমার দাঁতসহ উঠে যাবে। তারপর আমি জ্ঞান হারাই। আমার সাথে থাকা এক তরুণ আমাকে জানায়, তারা আমার দাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তারপর সেনাবাহিনীর কেউ তাদের ঠেকায়।

কাশ্মীর বিশ্বের সবচেয়ে সামরিকায়িত এলাকাগুলোর মধ্যে একটি। সেনা ও সশস্ত্র গোষ্ঠীদের সংঘর্ষ এখানে নৈমিত্তিক ঘটনা। অনেকেই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করে। তারা বিশ্বাস করে কাশ্মীরকে স্বাধীন করতে লড়ছে তারা। কিন্তু অনেকেই মনে করেন দু’পক্ষের সংঘর্ষে ভুক্তভোগী তারা।

কাশ্মীরে সংঘর্ষ চললেও দেশের অন্য অংশের বাসিন্দারা কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন বাতিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। তারা মোদির প্রশংসা করে এমন দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button