অর্থনীতি

চাল আমদানি করে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

চট্টগ্রামের চালের পাইকারি বাজারে চরম মন্দা চলছে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির চালের দাম বস্তাপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, শূন্য শুল্কে আমদানি করা প্রচুর চাল বিভিন্ন গুদামে মজুত রয়েছে। ফলে বাজারে দাম কমে যাওয়ায় আমদানি করা চাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। বাজারে চালের প্রচুর সরবরাহ থাকলেও বেচাকেনা কম।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারি ভাবে বিভিন্ন গুদামে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন গম মজুত রয়েছে। ২ মাস পর আমন ধান উঠবে। বেসরকারি ভাবে আমদানিকারকদের গুদামে প্রচুর চাল মজুত রয়েছে। ফলে সামনে চালের মূল্য বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা নেই।

গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি চালের মূল্য বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। নাজিরশাইল প্রতি বস্তা ২ হাজার ৪০০ টাকা, জিরাশাইল ১৮০০ থেকে ১৯০০ টাকা, মিনিকেট সিদ্ধ ১৩৫০ থেকে ১৪৫০ টাকা, মিনিকেট আতপ ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা, পাইজাম আতপ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা, কাটারীভোগ আতপ ২৩০০ থেকে ২৪৫০ টাকা, বেতি আতপ ১৩০০ থেকে ১৩৫০ টাকা, মোটা বেতি আতপ ১ হাজার টাকা, ইরি সিদ্ধ ১ হাজার টাকা ও পাইজাম সিদ্ধ ১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পাহাড়তলী বণিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক হাজী এস এম নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘চালের দামও কমে গেছে, বেচাকেনাও নেই। বাজারের চালের কোনো ঘাটতি নেই। আমদানিকারকদের বিভিন্ন গুদাম ভর্তি চাল। লোকসানে চাল বিক্রি করছে তারা। চট্টগ্রামের বাজার উত্তরাঞ্চরের জেলার চালের ওপর নির্ভরশীল। আগে প্রতিদিনই ট্রাকে ট্রাকে চাল আসত। এখন সপ্তাহে একদিন চাল আনা হচ্ছে। বাজারে চালের চাহিদা কমে গেছে।’

চাক্তাইয়ের চাল ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন বেলাল বলেন, ‘গত সাত/আট মাস যাবত্ কোনো চাল আমদানি হয়নি। চালের বাজারে চরম মন্দা বিরাজ করছে। বেচাকেনা কম। প্রতিটি ক্যাটাগরি চালের দাম কমে গেছে।’

জানা গেছে, সরকার গত মে ও জুন মাস নাগাদ চাল আমদানিতে ২৮ শতাংশ শুল্ক পুনর্বহাল করে। তার আগে সৃষ্ট খাদ্যঘাটতি নিরসনের জন্য চাল আমদানিতে শুল্ক তুলে দিয়েছিল। এসময়ে চট্টগ্রামে কয়েকটি শিল্প গ্রুপ বছরের শুরুতে প্রচুর চাল আমদানি করেছে। এখন এসব চাল নিয়ে বিপাকে পড়েছে তারা। লোকসানে বিক্রি করতে চাইলেও ক্রেতা মিলছে না।

জানতে চাইলে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক আবুল বশর চৌধুরী বলেন, আমার কাছে আমদানি করা প্রচুর চাল মজুদ রয়েছে। প্রতি কেজি আমদানি মূল্য ৩৮ টাকা পড়েছে। অথচ এসব চাল এখন বাজারে কেজি ২৬ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। চট্টগ্রামে আরো ২/৩ জনের কাছে আমদানি করা প্রচুর চাল মজুত রয়েছে।’

চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নায়েম মো. সাইফুল হক বলেন, দুই মাস পর আমন চাল বাজারে আসবে। সরকারি ছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন আমদানিকারকের গুদামে প্রচুর চাল মজুত রয়েছে। ফলে বাজারে চালের মূল্য বাড়ার কোনো কারণ দেখছি না।’

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button