নিউইয়র্কের ফোবানা সম্মেলনেও সাংবাদিকরা উপেক্ষিত!
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের পর এবার নিউইয়র্কের ফোবানা সম্মেলনেও উপেক্ষিত হয়েছেন প্রবাসী সাংবাদিকরা। গত ৩৩ বছরেও সাংবাদিকদের ভাগ্যে নির্দিষ্ট কোনো বসার জায়গা জোটেনি ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোশিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকা (ফোবানা) সম্মেলনে।
ফোবানা কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রায় প্রতি বছরেই সংবাদকর্মীরা উপেক্ষিত হয়ে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাংবাদিকদের জন্য কোনো আসন ব্যবস্থা না থাকলেও প্রতি বছরই সামনের সারিতে ফোবানা কমিটির নতুন পুরাতন সদস্য, আদম ব্যবসায়ী, প্রতারক ও ধান্দাবাজদের বসতে দেখা যায়।
নিউইয়র্কে গত শুক্রবার (৩০ আগস্ট) নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের নাসাউ কলিসিয়াম ও লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে শুরু হওয়া ৩৩তম ফোবানা সম্মেলনে যোগ দিতে আসা বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বাংলাদেশি মিডিয়াকর্মীরা চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছেন অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফোবানা সম্মেলনের খবর সংগ্রহ করতে আসা অনেক সাংবাদিক এ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য দিয়েছেন। তারা জানান, এবারের ফোবানা সম্মেলনে প্রবাসের বাংলা মিডিয়াগুলোকে চরমভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। বিশেষ করে নিউইয়র্কের বাইরের সংবাদকর্মীরা পড়েছিলেন বিপাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছরই ফোবানা সম্মেলনে আয়োজক কমিটি নামকাওয়াস্তে একটি মিডিয়া কমিটি গঠন করে থাকে। তবে এই মিডিয়া কমিটির কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ে না। তারা মিডিয়ার পাস (প্রবেশের অনুমতি) দিয়ে বিনামূল্যে নিজেদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদেরকে ফোবানার মঞ্চে ঢোকাতেই ব্যস্ত থাকে। সাংবাদিকতা করেন না এমন ব্যক্তিরাও গলায় ‘প্রেস পাস’ ও ‘ক্যামেরা ঝুলিয়ে’ ফোবানা সম্মেলনে ঘুরতে দেখা গেছে।
প্রকৃত সাংবাদিকদের জন্য তাদের করার কিছুই থাকে না। অনেক সন্মেলনেই মিডিয়া কমিটির কর্মকর্তা ও কর্মীদেরকে গ্রিনরুমে বসে বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে অংশগ্রহণ করতে আসা শিল্পী ও সংগঠনের স্লটের সময়সূচি ঘষামাজা করতেও দেখা গেছে।
মিডিয়া সেন্টার থাকলেও সেখানে ছিল না কোনো ব্রিফিংয়ের ব্যবস্থা। সম্মেলনের অনুষ্ঠানসূচি বা যাবতীয় তথ্যাদিও জানানো হয়নি সম্মেলন কভার করতে যোগদানকারী সাংবাদিকদের। ফলে সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিকদের নানা সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসি থেকে নিউইয়র্কের ফোবানা সম্মেলন কভার করতে আসা একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিক জাহিদ রহমান জানান, নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের নাসাউ কলিসিয়ামে অনুষ্ঠিত ফোবানার আয়োজক কমিটির আমন্ত্রণে তিনি সম্মেলনের সংবাদ কভার করতে নিউইয়র্কে এসেছিলেন দ্বিতীয় দিনে। কিন্তু কমিটির কেউ তাকে পাত্তাই দেননি।
তিনি বলেন, ২৩ আগস্ট বারোটার দিকে ফোবানার সদস্য সচিব আবীর আলমগীরকে ফোন করে তিনি সাংবাদিক পরিচয় দেন এবং নিজের জন্য একটি মিডিয়া পাস চেয়েছিলেন। জবাবে আবীর বলেন, ‘আপনি আসেন, আমি মিডিয়া পাসের ব্যবস্থা করব।’ তার কথামতো ওয়াশিংটন ডিসি থেকে তিনি নিউইয়র্কে এসে আবীরকে আবারও ফোন দিলে তিনি পাস দিতে সরাসরি অস্বীকার করেন। পরে জাহিদকে একটি বিনামূল্যের প্রবেশ টিকিট দিতে চাইলে নিজের সম্মান বজায় রাখার জন্য তিনি সেই বিনামূল্যের টিকিট গ্রহণে অসম্মতি জানান।