রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

করোনা চিকিৎসায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতাল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে

স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতাল করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গিয়ে হাসপাতালটির কোন চিকিৎসক,নার্স,টেকনিশিয়ান ও সেবা প্রদানকারী কর্মীরা কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। এখানে চিকিৎসা গ্রহন করে ৯৩ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন।
টিএমএসএস স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত গতকাল বৃহস্পতীবার ঠেঙ্গামারা বগুড়ায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য তুলে ধরে বলা হয় এই হাসপাতাল থেকে বিনা চিকিৎসায় কোন রোগী ফেরত যাবেনা। কোভিড ও নন কোভিড উভয় রোগীদের সেবা প্রদানে হাসপাতাল জোন ভিত্তিক সেবা প্রদান করছে। হাসপাতালে গ্রীণ,ইয়োলো, ও রেড জোনে বিভক্ত করে নির্দেশনা মেনে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। সেই হিসেবে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা আলাদা জোনে বিভক্ত হয়ে সেবা প্রদান করে থাকেন। চিকিৎসা প্রদান শেষে ডাক্তার নার্স ও স্টাফদের থাকার জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। অত্র হাসপাতালের ৬০ জন চিকিৎসক,১৫০জন নার্স এবং ২ শতাধিক টেকনিশিয়ান কভিড আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় এখানে কোন স্টাফ আক্রান্ত না হওয়ার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এখানকার ব্যবস্থাপনা ও কঠোর স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা ও সঠিক ভাবে পিপিই পরিধান করা। টিএমএসএস এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা বেগম ইন্টারনেট জুমের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন এই প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা প্রদানে তাদেরকে অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বোচ্চ ছাড় দেয়া হবে। ডাক্তারদের মনোবল বৃদ্ধি ও আর্থিক সুবিধা দিতে গিয়ে ৩ থেকে ৫ গুণ প্রণোদনা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়াও তাদের বীমার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিএমএসমএস এর উপ-নির্বাহী পরিচালক ডাঃ মোঃ মতিউর রহমান। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন টিএমএসএস স্বাস্থ্য সেক্টরের নির্বাহী উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল। তিনি বলেন ৭জুলাই ২০২০ ইং পর্যন্ত অত্র হাসপাতালে ৩৩৬ কোভিড আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ২০৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গছে। বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ৪৫ জন রোগী। সুস্থ হওয়ার হার ৯৩.৭ ভাগ। ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দিতে হয়েছে ৮ জন রোগীকে এবং তাদের শতভাগ ভেন্টিলেটর সাপোর্টের বাইরে রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয় কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত রোগীর দেহে ৪ ঘন্টা পরে কোন জীবানু থাকতে পারেনা। তখন নির্র্দিষ্ট প্রটোকল অনুসরন করে ধর্মীয় রীতি নীতি অনুযায়ী সংস্কার করা নিরাপদ। এই হাসপাতালে শতভাগ নির বিচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। এখন পর্যন্ত কোন রোগীর অক্সিজেন ঘাটতির মত সমস্যা তৈরী হয়নি। এখানে ভর্তি করা রোগীদের ৪ ঘন্টার মধ্যে করোনার স্যাম্পল পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বলা হয় হতাশা নয় এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পূর্ব প্রস্তুতির মাধ্যমে করোনা রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে। ৩১ মে থেকে এই হাসপাতাল করোনা ভাইরাস পরীক্ষা শুরু করে। গত ৭ জুলাই পর্যন্ত এখানে ৪ হাজার ৫ শত ৭৮ জনের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩৫% (১৫৮৭) পজেটিভ এবং ৬৬% (২৯৯১) নেগেটিভ রোগী পাওয়া গেছে।আরও জানানো হয় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় দেশ সেরা ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহন করা হয়েছে। তা ছাড়াও অভিজ্ঞ ডাক্তারদের সমন্বয়ে গঠিত টিম চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে।
সাংবাদিকদের কভিড বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ একেএম মাসুদুর রহমান,সহযোগী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডাঃ মোঃ আজিজুর রহমান,সহযোগী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডাঃ মোঃ মাহবুব আলম সিদ্দিকী।
ইন্টারনেট জুমের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পুন্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যামিরিটাস অধ্যাপক ড. এম আফজাল হোসেন,রোটাঃ এম খায়রুল আলম, দৈনিক করতোয়ার সম্পাদক মোঃ মোজাম্মেল হক লালু,টিএমএসএস এইচইএম সেক্টরের নির্বাহী পরামর্শক মোঃ খায়রুল ইসলাম,টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ শাহজাহান আলী সরকার,বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবি এর শিক্ষক অধ্যাপক হাসানাত আলী প্রমূখ। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button