লিড নিউজ

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এখন রোল মডেল: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। সরকার দুর্যোগ মোকাবিলার লক্ষ্যে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে দুর্যোগে প্রাণহানি এক ডিজিটে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ‘জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো দেশব্যাপী জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এবারের প্রতিপাদ্য ‘মুজিববর্ষের সফলতা, দুর্যোগ প্রস্তুতিতে গতিশীলতা’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের দুর্যোগ নিয়ে পূর্বপ্রস্তুতি ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে দুর্যোগে প্রাণহানি এক ডিজিটে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় চিরাচরিত ‘দুর্যোগ পরবর্তী সাড়াদান ব্যবস্থাপনা’ থেকে ‘আগাম ব্যবস্থাপনা’ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে এনেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কর্মসূচি প্রণয়নের পথিকৃৎ। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)। বঙ্গবন্ধু ঘূর্ণিঝড় থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় সেই সময় ১৭২টি উঁচু মাটির কিল্লা তৈরি করেন, যা পরে জনগণ ‘মুজিব কিল্লা’ নামকরণ করে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকারের সময়ে ‘মুজিব কিল্লা’কে সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করে মানব ও প্রাণিসম্পদের জন্য নিরাপদ ও টেকসই আশ্রয়স্থল করা হয়েছে। একইভাবে পুরুষের সঙ্গে নারী স্বেচ্ছাসেবক অন্তর্ভুক্ত করে আধুনিক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী ও গতিশীল করা হয়েছে। দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ব্যবস্থাপনায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জেন্ডার রেসপনসিভ ক্যাটাগরিতে ঘূর্ণিঝড়ে প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)-তে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্মানসূচক জাতিসংঘ জনসেবা পদক-২০২১ অর্জন করেছে।’
দুর্যোগে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে দেশের ঘূর্ণিঝড়প্রবণ উপকূলীয় এলাকায় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং বন্যাপ্রবণ ও নদীভাঙন এলাকায় টেকসই ও আধুনিক বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও মেরামত এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ক্রমবর্ধমান হারে গৃহীত প্রকল্প, গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মি দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প, ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগ উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, বজ্রপাত নিরোধক কর্মসূচি, গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ কর্মসূচি ইত্যাদি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দুর্যোগের আগাম সতর্কতা ও দৈনন্দিন আবহাওয়া বার্তা জানতে মোবাইলে ১০৯০ (টোল ফ্রি) আইভিআর পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, বজ্রপাত, শৈত্যপ্রবাহ ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে পূর্বপ্রস্তুুতি গ্রহণ করে জনগণকে সুরক্ষিত করে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার পাশাপাশি সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এখন রোল মডেল।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button