অর্থনীতি

সরবরাহ কম, তৃতীয় দফায় বাড়ল পেঁয়াজের দাম

আবারো পাইকারীতে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এ নিয়ে তৃতীয় দফায় দাম বাড়লো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যটির। খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানান, পেঁয়াজের আমদানি আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ার কারণে দাম বাড়ছে। অধিকাংশ গুদামে পেঁয়াজের মজুদ কমে গেছে। গতকাল চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের বাজারে গাড়ি প্রবেশ কমে গেছে। এরমধ্যে গতকাল মাত্র দুটি পেঁয়াজের গাড়ি আসে। বর্তমানে অধিকাংশ ব্যবসায়ীর গুদাম খালি। ফলে ভারতীয় পেঁয়াজ ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। এছাড়া মিয়ানমারের পেঁয়াজ ২০ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকা এবং মিশরের পেঁয়াজ ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জের হামিদউল্লাহ মিয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রশাসনের অভিযানের কারণে আমদানিকারকরা আর খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজ দিচ্ছেন না। প্রায় পেঁয়াজ টেকনাফ থেকে সরাসরি ঢাকায় চলে যাচ্ছে। ফলে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিয়েছে। গত দুদিনে খাতুনগঞ্জে মাত্র ৮ গাড়ি পেঁয়াজ এসেছে। এছাড়া আমদানিকারকরা আগের চেয়ে পেঁয়াজ আমদানিও কমিয়ে দিয়েছেন। কারণ প্রশাসনের কর্তারা খাতুনগঞ্জের কমিশন এজেন্টদেরকেও জরিমানা করে দিচ্ছেন। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এছাড়া জোর করে পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। কেউ তো আর লোকসান দিয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করবে না। গত দুদিন আগেও ভারতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। গতকাল সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়। এছাড়া মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৫০ টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। অন্যদিকে মিশরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। তবে মিশরের পেঁয়াজের বেচাবিক্রি কম বলে জানান আড়তদাররা। কক্সবাজারের টেকনাফ স্থল বন্দরের আমদানিকারক এবং জারিফ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মনজুর মোরশেদ জানান, মিয়ানমার আসা প্রতিটন পেঁয়াজের মধ্যে ৩৫০ কেজি নষ্ট পড়ছে। ফলে টেকনাফ পর্যন্ত প্রতিকেজি পেঁয়াজের আমদানি খরচ পড়ছে ৬৫ টাকা। কিন্তু চট্টগ্রামের মার্কেটে প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে অনেক ব্যবসায়ী চট্টগ্রামে পেঁয়াজ পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এছাড়া আমদানিও আগের চেয়ে কমে গেছে।

খাতুনগঞ্জের হামিদউল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে গুদামে পেঁয়াজ নাই বললেই চলে। আজকে (গতকাল) দুই গাড়ি পেঁয়াজ এসেছে। কিন্তু সেগুলো মুহূর্তেই ফুরিয়ে গেছে। আমরা শুনেছি টেকনাফে ৭৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। খাতুনগঞ্জ পর্যন্ত আসতে খরচ পড়বে ৮০ টাকা। কিন্তু প্রশাসনের কর্তারা আড়তে এসে প্রতি কেজি ৬০ টাকায় দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। তাই অনেক ব্যবসায়ীও পেঁয়াজ বিক্রি করতে আগ্রহী নন। আবার আমদানিকারকরাও কম টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করতে হবে ভেবে পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় পাইকারিতে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button