স্বাস্থ্য

খাবার যখন চোখ ফোলার কারণ

রাতে খুব ভালো ঘুম হয়েছে। অথচ, সকালে উঠেই দেখলেন চোখগুলো ফুলে একদম গোল হয়ে আছে। কেন এমন হলো? শুধু ঘুম নয়, খাবারও চোখের চারপাশ এভাবে ফুলিয়ে দিতে পারে। এভাবে চোখে ফোলাভাব এনে দিতে পারে এমন কিছু খাবারের নাম জেনে নিন আজ। আর সাথে থাকছে এই ফোলাভাব কমাতে পারে এমন কিছু ফলের নামও-

ক্যানজাত খাবার:-

এই ধরনের খাবারে অনেক বেশি সোডিয়াম থাকে। খাবার অনেক দিনের জন্য জমিয়ে রাখতেই সোডিয়াম ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য অনেক সমস্যার সাথে সাথে এই সোডিয়াম আমাদের চোখের চারপাশে ফোলাভাব এনে দেয়। এজন্য ক্যানের খাবার খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে বা পরিষ্কার করে নিন।

টমেটো:-

টমেটো আমাদের খুব পছন্দের ও স্বাস্থ্যকর একটি খাবার হলেও এটি এমন একটি গাছ থেকে উৎপন্ন হয় যার সহজাত গাছগুলো সোলেনাইন নামক একটি বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান তৈরি করে। আর এই উপাদান চোখের চারপাশে ফোলাভাব আনতে সাহায্য করে। যদি আপনার চোখের ফোলাভাব না কমে তাহলে টমেটো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যদি চোখের ফোলাভাব কমে যায় তাহলে বুঝতে হবে যে, টমেটোর জন্যই এমনটা হচ্ছিল।

গমের রুটি:-

গমের রুটি মানেই অনেক বেশি গ্লুটেন। আর আপনি যদি গ্লুটেন সহ্য করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে চোখ ফুলে যাওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো দেখা দিতে পারে। শুধু গম নয়, বার্লি বা সাধারণ শস্যজাত খাবারগুলো, যেগুলোতে অনেক বেশি গ্লুটেন থাকে সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

দুগ্ধজাত খাবার:-

দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে ল্যাক্টোজের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। আর এই ল্যাক্টোজ অনেকের শরীর মানিয়ে নিতে পারে না। এর ফলে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়। চোখ ফুলে যাওয়া এই সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এক্ষেত্রে, হজমজনিত কারণে এমনটা হয়ে থাকে। এরকম হলে দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়ার চেষ্টা করুন।

চিনি:-

যে খাবারগুলো শরীরে প্রদাহ তৈরি করে বেশি, সেগুলোর মধ্যে চিনি অন্যতম। আর শরীরে যখন নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তখন প্রদাহ বেশি প্রকাশ পায় তুলনামূলকভাবে দূর্বল ও কোমল স্থানগুলোতেই। এমন একটি স্থান হওয়ায় আমাদের চোখের চারপাশ আক্রান্ত হয় ও ফুলে যায়।

তাই, এমনটা হলে চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। চিনি না খাওয়ার অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও রয়েছে। অনেকেই চিনির পরিবর্তে কৃত্রিম মিষ্টিজাত ব্যাপারগুলো খান। তবে এটিও শরীরের জন্য পুরোপুরি ভালো নয়।

মরিচ:-

টমেটোর মতো মরিচেও সোলেনাইন রয়েছে। এছাড়া এতে ক্যাপসাইনাইনও আছে। যেটি ত্বকের কোমল অংশগুলোকে পুড়তে সাহায্য করে। ফলে, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলেও চোখে ফোলাভাব তৈরি হতে পারে।

চোখের ফোলাভাব দূর করবেন কীভাবে?

কিছু খাবার যেমন চোখের ফোলাভাব তৈরি করে, তেমনি কিছু খাবার এই ফোলাভাব দূর করতেও সাহায্য করে। এমন খাবারের মধ্যে আছে- পার্সলি, অ্যাভোকাডো, ওটস এবং শসা। পার্সলি শরীরে থেকে অতিরিক্ত জমাট তরল বের করতে কিডনিকে সাহায্য করে।

চোখের ফোলাভাবের পেছনে অন্যতম একটি বড় কারণ হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। আর এটি দূর করতে ওটস সাহায্য করে। তাই, চোখের ফোলাভাব দূর করতে আপনি পার্সলি এবং ওটস- দুটোই খেতে পারেন।

অন্য দিকে, অ্যাভোকাডো ও শসা খেলে স্বাস্থ্যগত উপকারিতা তো আছেই। এছাড়াও চোখের ওপরে এই দুটি জিনিস ব্যবহার করে দেখতে পারেন আপনি। এতে করে আপনার চোখ ঠান্ডা হবে। আপনার চোখের কালো দাগ সরিয়ে দিতেও সাহায্য করবে এই দুইটি ফল।

চোখের ফোলাভাব বেড়ে গিয়েছে? কোনো সমস্যা নেই। আপনার প্রতিদিনের খাবারের দিকে খেয়াল রাখুন। তাহলেই বুঝে যাবেন কেন এমনটা হচ্ছে আপনার সাথে। আর বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ওপরের খাবারগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার চোখের ফোলাভাব কমবে, চোখ থাকবে আরও সুস্থ।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button