আন্তর্জাতিক

করোনা রুখতে অ্যালকোহল খেয়ে ইরানে ৩০০ জনের মৃত্যু

কাউকে সামনে পেলে একটা কথাই বলছেন ইরানের এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ‘‌দয়া করে করোনা থেকে বাঁচতে কারখানায় ব্যবহৃত অ্যালকোহল খাবেন না।’ আর তার এই কাতর আবেদনের একটাই ‌কারণ, করোনা সংক্রমণের ভয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজবে কান দিয়ে ইরানের মানুষজন এখন খাচ্ছেন কারখানায় ব্যবহৃত অ্যালকোহল।

আর বিষাক্ত মেথানল মেশানো এই অ্যালকোহল খেয়েই এখনও পর্যন্ত ইরানে মারা গেছেন কমপক্ষে ৩০০ জন। এছাড়া হাজারেরও বেশি মানুষের কেউ হয়ে গেছেন অন্ধ, কেউ বা চলে গেছেন কোমায়। গতকাল শুক্রবার (২৬ মার্চ) সামনে এসেছে এমনই মর্মান্তিক ঘটনার কথা।

চীনের পর এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইরানে। কিন্তু এখন সেখানে করোনার পাশাপাশি এই বিষাক্ত অ্যালকোহল খেয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেয়নি ইরান সরকার।

সংক্রমণ বাড়ছে দেখে, ইরানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াতে থাকে একের পর এক গুজব। তারই একটি ছিল, কারখানায় ব্যবহৃত অ্যালকোহল খেলে করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচা যাবে। আর সেই গুজবে কান দিয়েই কয়েক হাজার মানুষ খেতে শুরু করেন বিষাক্ত মেথানল মেশানো এই অ্যালকোহল। আর তার ফলস্বরূপ এই মৃত্যুমিছিল।

মার্চের শুরুর দিকে ইরানে সংক্রমণ যখন ধীরে ধীরে বাড়ছিল, তখনই গুজব ছড়ায় ব্রিটেনের এক স্কুল শিক্ষকসহ অনেকে মধু এবং হুইস্কি খেয়ে করোনার হাত থেকে বেঁচেছেন। এরপরই এরকম আরও খবর সামনে আসতে থাকে। এরপরই দক্ষিণ-পূর্বের খুজেস্তান প্রদেশ এবং দক্ষিণের শিরাজ প্রদেশের মানুষজন বিষাক্ত অ্যালকোহল খেতে শুরু করেন। ফলে যা হওয়ার তাই হল। করোনার পাশাপাশি বিষাক্ত অ্যালকোহল খেয়ে মৃতের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে।

এই প্রসঙ্গে ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রালয়ের উপদেষ্টা ডাঃ হোসেইন হাসনাইন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‌অন্যান্য দেশের একটাই সমস্যা। তারা কেবল করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়ছে। কিন্তু আমাদের করোনার পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়া নয়া এই গুজবের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হচ্ছে। বিষাক্ত অ্যালকোহল খাওয়ার আক্রান্তদের বাঁচানোর পাশাপাশি করোনা আক্রান্তদেরও বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। ’‌

খবর নিউইয়র্ক টাইমস

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button