জরুরি সময়ের জন্য অর্থ সঞ্চয়ের উপায়

লাইফস্টাইল ডেস্ক: আর্থিক অনিশ্চয়তার সময়েও ভবিষতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করা সম্ভব। করোনাভাইরাস মহামারীতে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন কিংবা ঘরে বসে কাজ করেছেন। আর্থিক টানাপোড়ন সবাইকেই এই সময়ে কমবেশি চিন্তায় ফেলেছে। এর বিপরীতে রোজগারের কত অংশ ব্যয় করেছেন আর বিপদের দিনগুলো সামাল দেওয়ার জন্য কতটা সঞ্চয় করছেন সেই বিষয়গুলো নিয়ে মানুষকে ভাবতে বাধ্য করেছে এই মহামারীকাল।
আর্থিক অনিশ্চয়তার সময়েও ভবিষতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করা সম্ভব। সেই সঞ্চয় একসময় ভবিষ্যতের জন্য জরুরি তহবিলে পরিণত হবে। এমনকি বর্তমানের আর্থিক টানাপোড়নে থাকার পরও যদি সামান্য কিছু প্রতিমাসে জমানো যায় তবে সেটা পরবর্তী সময়ে আরও বড় সমস্যার দিনে কাজে আসবে।
যা করা যায়: ২০২০ সালে মহামারীতে আপনি বাড়িতে আটকা পড়েছিলেন। খরচের দিক থেকে সেই ঘরবন্দি সময়টার একটা ভালো দিক ছিল। এই সময়ে আপনার ব্যায়ামাগারে যেতে পারেননি, তাই প্রতি মাসে পয়সা দিতে হয়নি, রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাওয়া হয়নি, বেড়াতে যেতে পারেননি। এতে আপনার কিছু অর্থের সঞ্চয় হয়েছিল। ভবিষতের জন্য জরুরি তহবিল তৈরির শুরুটা করতে পারেন সেই নগদ সঞ্চয় দিয়েই।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য বাজেট মম’ এর প্রতিষ্ঠাতা কুমিকো লাভ রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “যদি সম্ভব হয় ধার দেনা এক মাসের জন্য পরিশোধ করা স্থগিত রাখুন। সেই টাকাটা হাতে রাখুন। এবার আপনার খাওয়ার খরচ কমানোর চেষ্টা করুন, বিনোদনের খরচ কমান। এই বাঁচানো অর্থ দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য সংগ্রহ করুন। সেখান থেকে এবার দেনা পরিশোধ করুন। এতে আপনার হাত একেবারে খালি হয়ে যাবে না। ”
তিনি আরও বলেন, “বাজার করতে যাওয়ার আগে ঘরের কোথায় কী আছে তা ভালোভাবে খুঁজে দেখুন। এবার সেগুলো মাথায় রেখে আর কী না হলেও নয় সেটার হিসাব করুন। তার প্রেক্ষিতে সাপ্তাহিক খরচের একটি হিসাব করুন এবং সেই অনুযায়ী খরচ করুন। সপ্তাহের বাজার একসঙ্গে করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন, এতে আপনার খরচ কমবে।
বাজেট করতে হবে: আর্থিক বিষয়গুলো কিছুটা নাগালে আসলে এবার খরচের বাজেট করতে হবে। আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলার জন্য বাজেট করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য মাসের সকল খরচের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ‘সোফি’র প্রত্যায়িত পরিকল্পনাকারী ব্রায়ান ওয়াল্স বলেন, “বাজেট করার ক্ষেত্রে ৫০-৩০-২০ পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে আয়ের ৫০ শতাংশ ব্যয় করতে হবে বাড়ি ভাড়া, বিভিন্ন বিল আর খাওয়ার খরচে। ৩০ শতাংশ অন্যান্য সকল খরচের জন্য। আর ২০ শতাংশ তোলা থাকবে ঋণ পরিশোধ বা ভবিষ্যত সঞ্চয়ের জন্য। ”
“এভাবে বাজেট তৈরির মাধ্যম যেমন নিজের ব্যয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে পারবেন। বেরিয়ে আসবে অপ্রয়োজনীয় খরচগুলো, যা সহজেই বাদ দেওয়া যেতে পারে। তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে বিবিধ খরচগুলো যা অপ্রয়োজনীয় নয়, আবার জরুরিও নয়। ”
তবে অন্তত ছয়মাস এভাবে অর্থ বাঁচাতে পারলে বেশ কিছু সঞ্চয় হবে। আর এত জটিলভাবে চিন্তা না করে প্রতিদিন অন্তত ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা জমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। তাহলেও ছয় মাসে কত টাকা জমতে পারে সেটা নিজেই হিসাব করে দেখুন।