রংপুর বিভাগসারাদেশ

রৌমারীতে বিদ্যুৎ সংযোগে অবৈধ অর্থ আদায়

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কয়েকটি এলাকায় নতুন বিদ্যুৎ সংযোগে গ্রাহকের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নতুন সংযোগের আওতায় গ্রাহক প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের কিছু অসাধু কর্মী স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে ওই অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এভাবে সাড়ে ৩শ’ নতুন গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে নতুন সংযোগের আওতায় আসা গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে ওই তথ্য জানা গেছে।
জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধিনে রৌমারীর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম একটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া। এলক্ষে শতভাগ বিদ্যূৎ সংযোগের আওতায় রৌমারী উপজেলা এখন শেষের দিকে। বর্তমানে উপজেলার দক্ষিন, পশ্চিম ও মধ্য টাপুরচর, বালুর গ্রাম, হাজিরহাট মুখতলা এলাকায় সাড়ে ৩শ’ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগে এখন মিটার লাগানো শুরু হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, পল্লী বিদ্যুতের কিছ অসাধু কর্মী গ্রাহক প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা আদায় করছে। পল্লী বিদ্যুতের নিয়োজিত স্থানীয় এক শ্রেণির দালাল ওই অর্থ আদায় করছে। গ্রামবাসিরা অভিযোগ করেন, এনামুল হক, শিমুল মিয়া, ওবায়দুল হক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গণি। টাপুরচরের বদিউজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বাড়িতে বিদ্যুতের তার লাগিয়েছে। এখন মিটার লাগাবে। ৬ হাজার টাকা দিছি। আরও এক হাজার টাকার জন্য মিটার লাগাচ্ছে না।’ একই গ্রামের ফুলুর উদ্দিন, ছামিউল ইসলাম, মুন্নাফ আলী, রফিয়াল হক ও আজিজাল হক এরা সবাই ৭ হাজার করে টাকা দিছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এ তথ্য।
বালুর গ্রামে সফিয়াল হক বলেন, ‘আমিও ৬ হাজার টাকা দিছি। আমার গ্রামের সবার কাছ থেকেই টাকা তুলেছে এনামুল হক নামের একজন। যে গ্রাহক ওই টাকা দিবে না তার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ লাগবে না।’ একই গ্রামের আব্দুল লতিফ, মাহবুর রহমান, ফুল মোহাম্মদরা জানান, গ্রামের সবাই আগে আগে টাকা দিয়ে দিচ্ছে। তাদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে বালুর গ্রাম থেকেই ৮ লাখ টাকার মতো উঠানো হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে হাজীরহাট এলাকার এনামুল হক বলেন, ‘টাকা ছাড়া পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা সংযোগ দেয় না। তাই আমার গ্রামের গ্রাহকদের কাছ থেকে কিছু খরচের টাকা উঠানো হয়েছে। গ্রাহক প্রতি ৭ হাজার করে আদায়ের তথ্যটি মিথ্যা।’ একই এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গণি বলেন, ‘গ্রাহক প্রতি ৭ হাজার টাকা নেয়ার বিষয়টি মিথ্যা।’
এ ব্যাপারে জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রৌমারী আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম (ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার) ভজন কুমার বর্মন বলেন, ‘বিদ্যুতের সংযোগ দিতে মিটার প্রতি সাড়ে চারশ’ টাকা লাগে। এর বেশি একটাও লাগে না। আমার কোনো কর্মী বিদ্যুৎ সংযোগের কথা বলে কোনো টাকা নিতে পারবে না। অবৈধ ভাবে টাকা নেয়ার প্রমাণ দিতে পারলে ওই কর্মীর চাকরি থাকবে না।’

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button