সারাদেশ

বাগেরহাটে লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় ঝুঁকিতে

বাগেরহাট প্রতিনিধি :

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতের ক্ষত উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের সর্বত্রই। বসতবাড়ি, বাড়ির বাগান ও রাস্তার পাশে উপড়ে পড়ে আছে অসংখ্য গাছপালা। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার তিন দিন পার হলেও অনেক এলাকায় এখনো অনেক গাছ পড়ে আছে। ভেঙে পড়া ঘরবাড়ির মেরামত কাজেও ধীরগতি। জনবল ও টাকার অভাবে এলাকার দরিদ্র পরিবারগুলো বাড়িঘরের ওপর পড়ে থাকা গাছ এখনো সরাতে পারেনি। এ কারণে তাদের ওই ভাঙা ঘরে পরিবার নিয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে। কবে নাগাদ তারা ভেঙে পড়া ঘর পুরোপুরি ঠিক করতে পারবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র অনেক পরিবারের কাছে এখনো কোনো সরকারি সাহায্য পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ তাদের। এসব পরিবার সরকারের কাছে সাহায্য চেয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে, সরকারের দেওয়া বরাদ্দ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খানপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। জেলার অধিকাংশ এলাকায়ও একই অবস্থা।

গত ১০ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের ৭৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬২টিতে কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। জেলায় দুর্যোগকবলিত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৩২ হাজার। ঝড়ে জেলায় ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৭৭৫টি এবং সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ৮ হাজার ৭৮৮ বাড়িঘর।

সদরের দক্ষিণ খানপুর গ্রামের আনোয়ারা বেগম, আবদুর রশিদসহ ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, ‘বুলবুলের আঘাতে আমাদের বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। পরের জায়গায় ঘর বানিয়ে বসবাস করি। জনবল ও টাকার অভাবে ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি মেরামত করতে পারছি না। এ ভাঙা ঘরেই পরিবার নিয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে।’

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের শনাক্ত করতে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে তালিকা তৈরি করছেন। এ তালিকা তৈরির পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী জেলার যেসব এলাকার মানুষ বুলবুলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব জায়গায় ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৮৫০ বান্ডিল ঢেউটিন, ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, জিআরের ২০০ মেট্রিক টন চাল, প্রায় দুই হাজার কার্টন শুকনা খাবার ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দীন বলেন, তার ইউনিয়নে ১১টি গ্রামের মধ্যে সবই কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে চারটি গ্রাম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি, মাছের ঘেরের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে এলাকার অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে কোনো সাহায্য পাইনি। তাই এখানকার ক্ষতিগ্রস্তদের কোনো সাহায্য দিতে পারিনি।’

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button