রংপুর বিভাগসারাদেশ

কুড়িগ্রামে তরুন উদ্যোক্তার ৫০ হাজার টাকায় খামার করে ভাগ্য বদল

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকির পশার ইউনিয়নের শিক্ষিত তরুন খামারী ও উদ্যোক্তা।
যিনি সব সময় বেকার শিক্ষিত যুবকদের  স্বপ্ন দেখান, যিনি সব  মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে চান এই যুবক তৌহিদুর রহমান ব্যাপারী  স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো বলতে মধ্যোবিক্ত ঘরে জন্ম তার।কোন ধরনের ব্যবসা করবে এনিয়ে ছিল অনেক ভাবনা।অনেক ভাবনা চিন্তা করে গরু ছাগলের খামার করার সিদ্ধান্ত নেয় সে। হাতে ছিল স্বল্প কিছু টাকা।প্রাথমিক মূলধন ৫০ হাজার টাকা।তাই দিয়ে২০১৭ সালে সদর ইউনিয়নের ব্যাপারী পাড়ায় ৪০ শতক জায়গা পুকুর সহ নিজেস্ব জমি  নিয়ে ৫টি ছাগল ও২ টি গাভী গরু দিয়ে শুরু খামারের যাত্রা। গরু মোটাতাজা করণ ও ছাগল পালন শুরু করে। ৩০/১২/২০ ডিসেম্বর তিন বছর বয়স তার খামারের। বর্তমানে ১০টি উন্নত জাতের বড় গরু, ৪০টি ছাগল রয়েছে খামারে।
আরো আছে গরু ছাগলের জন্য আলাদা টিন শেড ঘর,হাঁস মুরগী রয়েছে দুই শতাধিক। গরু, ছাগল ও অন্যান্য সম্পদের বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা। আবার খামার সম্প্রসারণের জন্য লীজ নেয়া হয়েছে আরো কিছু জায়গা। এই পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে ধাপে তাদের বিনিয়োগকৃত মূলধনের পরিমাণ ৭ লাখ টাকা। ২ বছরে খামারের লাভ হয়েছে ৫ লাখ টাকা।
উদ্যোক্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, আমি ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখতাম, চাকুরী করবনা। নিজে কিছু করব। কিন্তু সমস্যা ছিল অর্থের। যাক তারপরে পেয়ে গেলাম। আমার নিজের সঞ্চিত টাকা দিয়ে তিলে তিলে গড়ে তুললাম এই খামারটি।
আজ অনেক বেকার যুবকরা আমাদের খামার দেখতে আসে। তারা অনেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে, নিজেরা কিছু করতে। লক্ষ্য স্থির থাকলে স্বপ্ন বাস্তবায়ন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই বছর আমার আরো ১০ শতক জায়গায় পেপেঁর চাষ করব।
সেখানে মাসে আয় করতাম ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অথচ এখন আমি খামারে দৈনিক ২ঘন্টা সময় দি। বাকী সময় আমি সংসারের অন্যান্য কাজ করি। ১ম বছরের খামারে সামান্য মূলধন আর স্বল্প সময়ে আমার একক আয় ১লাখ ২৫ হাজার টাকা। খামারে এখন ৪ জন নিয়মিত কর্মচারী আছে। আজ আমি অনেটা স্বাবলম্বি, অন্য লোক আমার খামারে কাজ করে। তবে বর্তমান সরকারের অঙ্গিকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছা আমার খামার আলোয় আলোকিত ও পানির সমস্যা পোহাতে হয় না।
তৌহিদুর রহমান এসব কথা যখন সাংবাদিকে বলছিলেন, তখন তার মুখে ছিল সাফল্যর তৃপ্তির হাসি। বললেন, ‘পরিচিত কোনো বন্ধু যখন চাকরি করার কথা বলেন, আমি তাঁদের উৎসাহ দিই ব্যবসা করো। কারণ, আমাদের একটাই লক্ষ্য ‘চাকরি করব না, চাকরি দেব’। চাকুরীর পিছনে না ঘুরে নিজেরা উদ্যোক্তা হওয়া যায়। যার জন্য সবচেয়ে বেশী দরকার মনোবলের।
এব্যাপারে তৌহিদুর রহমান বলেন, আমি নিজ উদ্যোগে চিন্তা করছি এই ধরনের কিছু একটা করব। আমি প্রায়সময় খামারটির অনেক কাজ নিজেও করি। সফল উদ্বোগক্তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে রাজারহাট উপজেলা সদর চাকিরপশা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন,ব্যাপারী মৎস্য এন্ড ডেইরী ফার্ম উদ্যোগটা অনেক সুন্দর। একদিকে তারা নিজেরা স্বনির্ভর হচ্ছে অন্য দিকে এলাকায় কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারী নানা পৃষ্টপোষকতা পেলে তারা আরো ভাল করবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button