রংপুর বিভাগসারাদেশ

কুড়িগ্রামে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরো শতাধিক চর।

জেলার বে-সরকারি সংস্থাগুলোর দেয়া তথ্যমতে,পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়ালেও জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে ৪৯ টি ইউনিয়নে ৮৭ হাজার ২৩২ জন মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে কুড়িগ্রামে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ৮৫টি মেডিকেল টিম, ৯টি উপজেলায় একটি করে মনিটরিং টিম এবং সিভিল সার্জন অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকেও ১৮টি ভেটেনারী মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, সোমবার (২০ জুন) সকালে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫১ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি এখনো বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের গারুহাড়া গ্রামের খুটু মিয়া বলেন,’আমি অন্যের পুকুর লিজ নিয়ে মাছ করি। এবারও কয়েকটি পুকুরে মাছ ছাড়ছি বন্যার পানিতে তলিয়ে সব মাছ ভেসে গেছে। এতে আমার দেড় থেকে ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

ওই ইউনিয়নের মিল পাড়া গ্রামের কাজিয়াল বলেন, ‘বাড়িতে বন্যার পানি উঠায় গবাদিপশুশুলোকে নিয়ে উঁচু সড়কে এসেছি। আমাদের সাথে সাথে গরুগুলোরও খুব কষ্ট। এখন রাস্তায় থাকা লাগবে বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলে তার পর বাড়ি যাবো।’

যাত্রাপুরের রলাকাটা চরের বাসিন্দা আনোয়ার মিয়া বলেন,’ বানের পানিতে ঘর তলায় গেছে,ঘরের চালে গতকাল থেকে না খেয়ে আছি’।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, নাগেশ্বরীতে বেরী বাঁধের ৫০ মিটার ওয়াস আউট হয়ে গেছে। এছাড়া দুধকুমর নদীর কালিগঞ্জ, বামনডাঙ্গা ও ধাউরারকুটি এলাকায় বাঁধ ঝুকির মধ্যে রয়েছে। এই এলাকায় ৪৮ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আগামি সেপ্টেম্বরে কাজ শুরু করা হবে। বন্যার পানি আরো তিনদিন বাড়তি থাকবে। এরপর কমে নিম্নগামি হবে। বানভাসিদের মধ্যে সরকারি সহায়তা ছাড়াও মানবিক বাংলাদেশ সোসাইটির উদ্যোগে শুকনো খাবার বিস্কুট বিতরণ করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসক দপ্তরে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতিদিনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রদান করতে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০ লাখ টাকা এবং ৪০৭ মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে। এছাড়াও আরো ৫০০ মেট্রিক টন চাল ও ২০ লাখ টাকার চাহিদা দেয়া হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button