সারাদেশ

সিরাজগঞ্জের যুবককে অপহরন করে কুড়িগ্রামের উলিপুরে হত্যার চেষ্টা,আটক ৪

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) কুড়িগ্রামের উলিপুরে সিরাজগঞ্জের এক যুবককে অপহরণ করে ব্রম্মপুত্র নদের নির্জন চরে নিয়ে যাওয়ার সময় একদল দূর্বৃত্তকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে জনতা। এ সময়ে ওই যুবক জীবন বাঁচাতে মোটরসাইকেল থেকে লাফ দিয়ে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় জনতা দূর্বৃত্তদের আটক করে ৯৯৯ এ ফোন দেন।

অভিযোগ উঠেছে, দূর্বৃত্তরা ওই যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণের দাবিতে ব্যর্থ হয়ে হত্যার উদ্দ্যেশে নিয়ে যাচ্ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে, গত মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে এগারটার দিকে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের পালের ভিটা নামক স্থানে। এ ঘটনায় ৮জনকে আসামী করে উলিপুর থানায় মামলা দায়েরের পর পরদিন বুধবার আটককৃতদের কুড়িগ্রাম জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধরণীবাড়ি ইউনিয়নের মাদারটারী গ্রামের ইউসুফ আলীর কন্যা সুলতানা ওরফে এসমোতারা বেগমের (২৩) সাথে ঢাকায় গার্মেন্সে চাকরি করার সুবাদে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার সরাই হাজিপুর গ্রামের আফছার আলীর পুত্র রাকিবুল ইসলাম (২৭)এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে এক পর্যায়ে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। স্ত্রী এসমোতারা বাবার বাড়িতে থাকায় গত সোমবার রাখিবুল শ্বশুড়বাড়ি বেড়াতে আসে। মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় দূর্বৃত্তরা ইসমোতারার বাড়িতে এসে তাদের বিয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে। এরই এক পর্যায়ে রাকিবুলকে নিরাপদে রাখার কথা বলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে রাকিবুলকে শারীকিভাবে নির্যাতনের পর ফাঁকা স্ট্যাস্পে সই করাসহ মুক্তি পণ দাবি করে। এতে ব্যর্থ হয়ে ওইদিন গভীর রাতে তাকে হত্যার উদ্দ্যেশে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় পালের ভিটা নামক স্থানে নিয়ে যায়। এ সময় তার আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে চক্রটিকে আটক করে ৯৯৯ এ ফোন দেয়।

পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ধরণীবাড়ি ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের শামছুল হকের পুত্র চাকরিচ্যুত সেনা সদস্য এরশাদুল হক (৪৭), একই ইউনিয়নের মাদারটারি গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র মাহবুব আলম (৩৬), আব্দুল লতিফের পুত্র রাশেদুল ইসলাম (৩২), উমর আলীর পুত্র আব্দুল মান্নান (৩০) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় মাদারটারি গ্রামের আব্দুর রহিম (সাধু) মিয়ার পুত্র পলাশ মিয়া (২৮) পালিয়ে যায়। পরে, রফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে ৮জনের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

রফিকুলের স্ত্রী ইসমোতারার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এরশাদুল আর্মি আমার বাড়িতে এসে আমাদের বিয়ের ব্যাপারে জানতে চায়। আমরা তিন বছর আগে বিয়ে করেছি বললেও তারা বিশ্বাস করতে চায় না। পরে তারা আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে নিয়ে যায়। এব্যাপারে রফিকুলের পিতা আফছার আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মঙ্গলবার দুপুর থেকে আমার ছেলের মোবাইল ফোন দিয়ে একজন কল করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা দিতে অপারগতা জানালে পরবর্তীতে তারা আমার ছেলেকে মারধর করা অবস্থায় ফোন দিয়ে ছেলের কান্নাকাটি শোনায়, বিষয়টি রায়গঞ্জ থানায় অবহিত করি।

উলিপুর থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের কুড়িগ্রাম জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button