শিক্ষাঙ্গন

সাত কলেজে পরীক্ষা স্থগিত: নীলক্ষেত-তিতুমীরে বিক্ষোভ

চলমান পরীক্ষা হঠাৎ স্থগিত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার রাতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে ও তিতুমীর কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলেও হঠাৎ রুটিন দিয়ে শুরু হয় সাত কলেজের বিভিন্ন সেশনের পরীক্ষা। সাত কলেজের ২০১৬-১৭ সেশনের চলমান সমাপনী পরীক্ষার চারটি বিষয় ও ১৫-১৬ সেশনের মাত্র একটি বিষয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া বাকি রয়েছে। এর মধ্যেই মঙ্গলবার পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানায় কর্তৃপক্ষ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।

নীলক্ষেতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের প্রথম দাবি— সাত কলেজের চলমান পরীক্ষাগুলো নিতে হবে। আগামীকালের (বুধবার) যে পরীক্ষাটি, সেটি নতুন তারিখ দিয়ে নিতে হবে। বাকি পরীক্ষাগুলোও নির্দিষ্ট তারিখে নিতে হবে। সব ক্যাম্পাস ও হল খুলে দিতে হবে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এমনিতেই অনেক বছর শেষ হয়ে গেছে। তার ওপরে পরীক্ষার সময় তিন মাস পেছানো হলে আমরা কোথায় যাব? এই তিন মাস আমাদের একবছর পিছিয়ে নিয়ে যাবে। তাহলে আমাদের স্নাতক কবে শেষ হবে? আমাদের সঙ্গে কেন এমন হচ্ছে? এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করছেন তারা।

তিতুমীর কলেজ সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, মানববন্ধন, অনশন কর্মসূচি ও সবশেষ তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমানের চোখের বিনিময়ে ঢাবি আমাদের কার্যক্রম ধীরগতিতে শুরু করে। আন্দোলনের পর আমাদের পরীক্ষা শুরু হলেও এখন মাঝপথে করোনার দোহাই দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। এটা কেমন খেলা খেলছে ঢাবি? এটা কোন ধরনের প্রহসন? আমাদের আইডি কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, অথচ এখনো অনার্স শেষ করতে পারলাম না আমরা।

আন্দোলনরত অনার্স তৃতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বর্তমান দাবি— পরীক্ষাগুলো নেওয়া হোক। আমরা তাহলে নিশ্চিত জীবন পাব। আমরা এই অনিশ্চিত জীবন চাই না। আমাদের মা-বাবা আমাদের পড়ালেখা করানোর জন্য রাজধানীতে পাঠিয়েছেন। আন্দোলন করে শিক্ষাবর্ষে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য না।

জানতে চাইলে সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত (ফোকাল পয়েন্ট) ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারের বলেন, পরীক্ষা নেয়া বা না নেয়া ঢাবির এখতিয়ার। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সুপারিশ করতে পারি। তারা সিদ্ধান্ত নেয়।

তিনি আরও জানান, পরীক্ষাগুলো স্থগিত করা হয়েছে। চতুর্থ বর্ষের বাকি একটা পরীক্ষাসহ সব পরিক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্তের আগ পর্যন্ত আর কোনো পরীক্ষা নেওয়া হবে না।

এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি বড় সরকারি কলেজের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত (ফোকাল পয়েন্ট) ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার নিজেই এ তথ্য জানান।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button