অর্থনীতি

লভ্যাংশ কমেছে মিউচুয়াল ফান্ডে

মেয়াদি ফান্ডের অবসায়নের সময় হলেও সরকারি সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ আরো ১০ বছর করে বাড়িয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আর মেয়াদ বাড়ানোর ফলে ইউনিটহোল্ডারদের স্বার্থে নগদ লভ্যাংশ দিতেও বাধ্যতামূলক করেছে কমিশন। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্ত মেনে ফান্ডের ট্রাস্টি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও আগের বছরের চেয়ে অনেক হ্রাস পেয়েছে।

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের হিসাব শেষে সম্প্রতি ৩০ মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সব ফান্ডই এবার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে; কিন্তু আগের বছরের চেয়ে লভ্যাংশ কমেছে ৮৩ শতাংশের। আগের বছর ১০টির বেশি মিউচুয়াল ফান্ড নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি পুনর্বিনিয়োগ ইউনিট ঘোষণা করেছিল। কিন্তু তারা এবার শুধু নগদ লভ্যাংশই ঘোষণা করেছে, তবে আগের বছরের চেয়ে অনেক কম।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যানুযায়ী, নগদ লভ্যাংশ ঘোষণায় মিউচুয়াল ফান্ডে আগ্রহ বেড়েছে বিনিয়োগকারীর। নগদ লভ্যাংশ পাবার আশায় শেয়ার কিনতেও চাপ লক্ষ করা গেছে। গতকাল রবিবার দাম বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা ১০টি কম্পানির মধ্যে চারটিরই মিউচুয়াল ফান্ডের। এ ছাড়া ২০টির বেশি মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৬ জুলাই পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে মিউচুয়াল ফান্ডে পুনর্বিনিয়োগ পদ্ধতি বাতিল করে। কমিশনের নতুন আদেশ অনুযায়ী, এখন থেকে বেমেয়াদি ও মেয়াদি উভয় ধরনের ফান্ডের ক্ষেত্রে শুধু নগদ লভ্যাংশ দিতে পারবে ট্রাস্টি। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে বছরের পর বছর মন্দাবস্থার মধ্যে থাকা মিউচুয়াল ফান্ড চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

এর আগে গত বছরের ২ অক্টোবর কমিশন মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ পুনর্নির্ধারণের আদেশ প্রদান করে। মেয়াদি ফান্ডের শর্ত শিথিল করে তালিকাভুক্ত মেয়াদি ফান্ডের মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করে কমিশন। ওই মেয়াদি ফান্ডের মেয়াদ সূচনা হতে সর্বোচ্চ ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারবে বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, জুলাই মাসে শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের মধ্য পর্যন্ত ২৯টি মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট হোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে একটি ফান্ডের লভ্যাংশ আগের বছরের বেড়েছে, আর একটির লভ্যাংশ গত বছরের সমান রয়েছে। দুটি ফান্ড সদ্য তালিকাভুক্ত হওয়ায় এবারই প্রথম লভ্যাংশ দিয়েছে। বাকি ২৫টি ফান্ডের লভ্যাংশ আগের বছরের চেয়ে হ্রাস পেয়েছে।

লভ্যাংশের হিসাব বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির মিউচুয়াল ফান্ডগুলো সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশ আর সর্বনিম্ন ৩ শতাংশ পর্যন্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ইউনিটহোল্ডারদের ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিয়েছে মাত্র তিনটি কম্পানি। ৩-৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে ১৮ কম্পানি আর ৫-১০ শতাংশ পর্যন্ত লভ্যাংশ দিয়েছে ৯টি কম্পানি।

ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ২০১৮ সালে ইউনিটহোল্ডারদের জন্য ১১ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। যার ৯ শতাংশ পুনর্বিনিয়োগ ইউনিট আর ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ। তবে এবার চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত হিসাব শেষে মাত্র ৩.৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড গত বছর ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে, যার ৮ শতাংশ পুনর্বিনিয়োগ ইউনিট আর ২ শতাংশ ছিল নগদ লভ্যাংশ। তবে এবার এই ফান্ড ইউনিটহোল্ডারদের জন্য ৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button