সারাদেশ

কলাপাড়ায় বেড়েছে দ্রব্য মূল্যের দাম

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় করোনা পরিস্থিতি ও আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানকে পূঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়াতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব ব্যবসায়ীরা চলমান লকডাউনে পন্য সামগ্রীর সীমিত সরবরাহ ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে চাল, ডাল, আলু, পিয়াঁজ, রসুন,হলুদ,মরিচ, চিনি, আদা ও ব্লিসিং পাউডার সহ হাত ধোয়ার কাজে ব্যবহৃত পন্য সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। তবে বাজারে অনাকাঙ্খিত ভাবে বেড়েছে চাল, ডাল, হলুদ, মরিচ, আদা ও ব্লিসিং পাউডারের দাম। দেশের এই সংকটকালিন সময়ে বাজার পরিস্থিতি ক্রমশ: অস্বাভাবিক হয়ে ওঠায় বিপাকে পড়ছেন সীমিত আয়ের মানুষ।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, এক সপ্তাহ পূর্বে প্রতিবস্তা টেপু চালের মূল্য ছিল ১৪৫০, বর্তমানে বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২২৫০ টাকা মূল্যে। সাদা মোটা ছিল ১৭০০ বর্তমানে তা ২২০০ টাকা। দাদা মিনিকেট ছিল ২৩০০ বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২৯০০ টাকায়। বালাম ২৮ ছিল ১৮০০ বর্তমানে তা ২৪০০ টাকা। কাজল মোটা ছিল ১২৫০ বর্তমানে তা ১৯০০ টাকা দরে বেচা কেনা হয়। স্বর্ন মুশুরী ছিল ১৫০০ বর্তমানে ২২০০ টাকা। এছাড়া প্রতিবস্তা পাইজাম চালের মূল্য ছিল ২২০০, বর্তমানে বাজারে তা বিক্রী হচ্ছে ২৪০০ টাকা মূল্যে। এতে খুচরা বাজারে প্রকার ভেদে প্রতি কেজি চালের মূল্য বেড়েছে ১০ থেকে ১৬ টাকা।
এছাড়া গত এক সপ্তাহ পূর্বে প্রতি কেজি পিঁয়াজের মূল্য ছিল ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা মূল্যে। প্রতি কেজি আলু ছিল ১৮ টাকা পরিবর্তে ২৬ টাকা। লাল মরিচের দাম ১৮০ টাকা থাকলেও বর্তমানে তা ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। একই অবস্থা হলুদেরও। প্রতি কেজি রসুন ছিল ৭৫ টাকা বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। এক সপ্তাহ পূর্বে প্রতি কেজি সোলাবুট ৭০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা মূল্যে। প্রতি কেজি মুশুরী ডাল ছিল ৬০ টাকা বর্তমানে তা ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল ছিল ৯০ টাকা বর্তমানে ১০০ টাকা। চিনি ছিল ৬০ টাকা বর্তমানে ৭০ তা টাকা। প্রতি কেজি আদা ছিল ১৪০ টাকা বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা মূল্যে। প্রতি কেজি ব্লিসিং পাউডার ছিল ৬০ টাকা বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা মূল্যে। হ্যান্ড ওয়াশ, ডেটল, স্যাভলন’র সরবরাহ একেবারে শূন্যের কোঠায়।

যদিও নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রীর মূল্য সহনীয় রাখতে নজরদারীসহ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছেন প্রশাসন। প্রায় দিনই দ্রব্য ুল্যের ম বৃবিাড়ানো হচ্ছে। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সভা করা হচ্ছে। মূল্য তালিকা প্রদর্শনের নির্দেশনা সহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। তবুও থেমে নেই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। তারা স্বল্প আয়ের মানুষকে বিপাকে ফেলে অধিক মুনাফা লাভের আশায় চাল সহ নিত্য পন্যের মজুদ বাড়াচ্ছে তাদের গুদামে এমন অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা

এদিকে একাধিক চাল ব্যবসায়ীর দাবী, এবছর সরকার কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় মাঠ পর্যায় থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের ফলে মিল মালিকদের কাছে চালের মজুদ নেই। এমনকি সরকার মিল মালিকদের চেয়ে ভাল দামে ধান কেনায় মিল মালিকরা এবছর তাদের কাঙ্খিত মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করতে পারেননি। তাছাড়া এ অঞ্চলের বাজারে বেশীর ভাগ চাল আসে দিনাজপুর, গোবিন্দগঞ্জ থেকে। লাগাতার লকডাউনে চাল সরবরাহ না থাকায় পাইকারী বাজারে বস্তা প্রতি চালের মূল্য বেড়েছে ৫০০-৮০০ টাকা হারে। খুচরা বাজারে যা আরও বেশী। তবে পরিস্থিতি আগামী ১৫দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হবে বলে জানায় চাল ব্যাবসায়ীরা। তবে কিছুটা কৃত্রিম সংকটের কথাও বলছেন কেউ কেউ। কলাপাড়ায় একাধিক অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছেন। যারা অধিক মুনাফার জন্য সরকারী ভিজিডি, ভিজিএফ, ফেয়ার প্রাইস, ওএমএস সহ সকল ধরনের চাল ও গম ক্রয় করেন। খাদ্য গুদাম, খাদ্য অধিদপ্তর ও অসৎ জনপ্রতিনিধিদের সাথে গোপন কানেকশনে এদের কেউ কেউ এখন ধন কুবেরএ পরিনত হয়েছে।

শান্তিবাগ নিবাসী ভূক্তভোগী জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় বাজারে শুধু গরুর দুধের দামই কম। আর সব জিনিষের দাম কয়েক দিনের ব্যবধানে অনেক বেড়েছে।অপরদিকে খুচরা মুদি ব্যবসায়ী সাইদুর বলেন, পাইকারী বাজার থেকে বেশি দামে মালামাল কিনতে হয়। তাই আগের চেয়ে একটু বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়। চাল ব্যবসায়ী সিদ্দিক তালুকদার বলেন, মহাজনদের কাছ থেকে চাল কিনে বাজারে বিক্রি করি। প্রতি কেজি চাল ক্রয় মূল্যের চেয়ে ২-৩ টাকা বেশি বিক্রি না করলে পোষায় না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারী নির্দেশনা মোকাবেক স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রীর মূল্য সহনীয় রাখতে বাজারে নজরদারী বাড়ানো হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। রমজান মাসে জনসাধারনের স্বার্থে বাজার গুলোতে বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে দেয়া হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button