জাতীয়দুর্যোগলিড নিউজশিক্ষাঙ্গন

২২ জন অংশ নেন নির্যাতনে, মুখ চেপে ধরায় কাঁদতে পারেনি আরবার

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলে গত রবিবার রাতে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় আরবারকে। সেদিন সন্ধ্যায় বুয়েট শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে আরবার ব্যস্ত ছিলেন পড়ালেখায়। রাত ৮টার দিকে আবরারকে ওই হলের দোতলার ২০১১ নম্বর টর্চার সেলে ডেকে নিয়ে হুমকি দিতে শুরু করেন বুয়েট ছাত্রলীগের নেতারা।

এ পর্যায়ে ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার আবরারের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে হকি স্টিক দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। সেখানে অবস্থান করা সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিনও আরেকটি হকি স্টিক নিয়ে আবরারকে পেটানোতে অংশ নেন। ওই সময় ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন আবরারের হাত ধরে রাখেন। আর আবরারের পায়ে পেটাতে থাকেন উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল।

সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ইশতিয়াক মুন্নাও নির্দয়ভাবে পেটাতে শুরু করেন আবরারকে। কেউ হকি স্টিক দিয়ে, কেউ লাঠি দিয়ে, কেউ বা কিল-ঘুষি দিয়ে ইচ্ছামতো আবরারকে পেটানোতে অংশ নেন। এভাবে ২২ জন অংশ নেন এই ভয়ঙ্কর নির্যাতনে। আবরার একটু কাঁদতেও পারেননি। কারণ তখন তার মুখ চেপে ধরা হয়েছিল।

ওই অবস্থার মধ্যেই টর্চার সেলে প্রবেশ করেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ও সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ। তারাও অপেক্ষা না করে নিস্তেজ প্রায় আবরারকে পেটাতে শুরু করেন। এভাবেই একপর্যায়ে আবরার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তাদের গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন ভয়ংকর তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, প্রাথমিক তদন্ত ও ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা ভিডিও ফুটেজে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১৯ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button