বগুড়া আ. হক কলেজে ৮ লক্ষ টাকার ফোন জব্দ: শিক্ষকের অস্বীকার
বগুড়ায় সরকারী আজিজুল হক কলেজ একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি আই ফোন সহ প্রায় অর্ধশত মোবাইল ফোন জব্দ করে তা ধাপা-চাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উক্ত ভবনের সহকারী ইনচার্জের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ১৩ জুন আজিজুল হক কলেজ ইন্টারমিডিয়েট ভবনে একজন ছাত্রকে ক্লাসরুমে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় দেখে ফেলেন উক্ত ভবনের সহকারী ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান। সাথে সেই ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করেন তিনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেই সেকশনের প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর ব্যাগ ও শরীর চেক করা হয় এবং মোট প্রায় অর্ধশত মোবাইল ফোন ও অনেকের আইডি কার্ড জব্দ করা হয়৷ শরীর চেক করা থেকে রেহাই পায়নি ছাত্রীরাও, এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশেষ ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও সেই সকল শিক্ষার্থীদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ/ যথাযথ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। জব্দকৃত মোবাইল গুলোর মোট আনুমানিক মূল্য ৮-১০ লক্ষ টাকা।
শিক্ষার্থীদের বক্তব্য অনুসারে, কোচিং/প্রাইভেট – কলেজ মিলিয়ে সারাদিনই তাদের বাইরে থাকতে হয়। এজন্য কাছে মোবাইল ফোন থাকা স্বাভাবিক ও প্রয়োজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী জানান, বাসায় অনেক বায়না করে বাবা মার কাছ থেকে দামি একটা ফোন কিনে নিয়েছি। কিন্তু কলেজে ফোন কেরে নেবার পর বাসায় ঘটনাটা বিশ্বাস করাতে পারিনি। তাদের ধারনা আমি হয়ত নেশা করার জন্য বা অন্য কোন কারনে ফোন বিক্রি করে বা নষ্ট করেছি। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো ঝামেলা চলছে আমার বাসায়।
এদিকে, এর আগে একই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে টিফিন পিরিয়ডে একজন ছাত্রীর হাতে থাকা মোবাইল ফোন নিয়ে সাথে সাথে ভেঙ্গে ফেলেন তিনি। এছাড়াও, বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বাজে আচরণ এবং, নানাভাবে অপমান ও হেনস্থা করার অভিযোগও আছে উক্ত ভবনের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
মোবাইল জব্দ করা এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সাথে কথা হলে তিনি বগুড়া লাইভকে জানান, ঘটনার কিছুই তারা জানেন না। শিক্ষার্থীরা যদি ফোন কলেজে ব্যবহার করে থাকে তবে সেটা তাদের ভুল ছিলো। কিন্তু কলেজ থেকে তাদের এখনো কিছু জানানো হয়নি।
অন্য দিকে, ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে সহকারী ইনচার্জের মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে সোমবার কলেজ চলাকালীন এক শিক্ষার্থীর কাছে মোবাইল পাওয়া যায় এবং ফোন নিয়ে তাকে বলা হয় অভিভাবককে সঙ্গে এনে ফোনটি নিয়ে যেতে।
এ বিষয়ে কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বগুড়া লাইভকে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। ক্লাসে অমনোযোগী হবার কারনে এবং নিষেধাজ্ঞা সত্বেও মোবাইল ব্যবহার করায় ফোনগুলো নেয়া হয়েছে। অভিভাবক উপযুক্ত কারন দেখানোর পর ফোন নিয়ে যেতে পারবেন। তবে কতগুলো ফোন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি সঠিক করে সংখ্যা জানাতে পারেন নি।