রংপুর বিভাগসারাদেশ

ছয়বার ব্রহ্মপুত্র নদের কবলে ভেঙ্গেছে বাড়ি, এবারও ভেঙ্গে যাওয়ায় অন্যত্র যাচ্ছি

কুড়িগ্রাম।। বন্যার পানি টান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রম্মপুত্রের নদের  ভাঙ্গনের কবলে পড়েছেন কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের মানুষ। ফলে ভিটেমাটি হারিয়ে নতুন ঠিকানার সন্ধানে যেতে হচ্ছে এসব মানুষকে।  গ্রামীণ ও চরের রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় যাতায়াতের ভোগান্তি বেড়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান ধরলা  ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদ সীমার নিচে  নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতের চিহ্ন দৃশ্যমান হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পেটে হকের চর। নদীর পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গত তিন দিনে এখানকার নয়টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। তাদের মধ্যে আমিরুল মিস্ত্রি (৬০) ও আলহাজ মিস্ত্রি (৩৫) বাড়িঘর নৌকায় তুলে যাচ্ছে গুজিমারি চরে। নৌকা জুড়ে দুটি পরিবারের ঘরের চাল সহ অন্যান্য আসবাবপত্র। আমিনুলের বাবা আশিধে্ধা রফিকুল মিস্ত্রি বলেন ব্রহ্মপুত্র দুইদিনে আমার দুই ছেলের বাড়ির সহ নয় জনের ভিটে ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। সবাই এখন খোলা আকাশের নিচে। গুজিমারির চরের বাবু মিয়ার ১২ শতক জমি ২০ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছে দুই ছেলে। সেখানেই যাচ্ছি। রফিকুলের পরিবারের সবাই কাঠমিস্ত্রি। এর আগে আরো ছয় বার তাদের বাড়ি ব্রহ্মপুত্রে কবলে গেছে। প্রথমে ছিলেন বাগুয়ার চরে। গুজিমারি চরেও কতদিন থাকতে পারবেন তা নিয়েও শঙ্কা আছে রফিকুলের। একই চরে ভিটেমাটি হারানো মাইদুল ,মোহাম্মদ আলী ও মুকুল এখনো মাথা গোঁজার ঠাঁই পাননি। এরকম দুর্যোগের সময় জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ নেননি বলে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ। কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নে ২২ টি পরিবারের বাড়িঘর ভেঙ্গে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান। এদিকে উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের দুর্গম চর বাগুয়ায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। প্রায় ১০ মাস আগে সেখানকার কিছু মানুষ উদ্যোগ নিয়ে  চরে আনন্দবাজার নাম একটি হাট বসিয়েছিলেন। সেখানে ৩৫ টি দোকান ছিল । গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে ১৫ টি দোকান ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকার কৃষক আক্কাস আলী জানান আনন্দ বাজার সংলগ্ন চর বাগুয়ায় ৩৪ টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। সাহেবের আলগা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু সায়েম বলেন গুদমারির চলে ৫ টি গ্রাম। এগুলো হলো, গুজিমারি , হকের চর, কাজিয়ার চর,জোরদার পাড়া,ও  পূর্বপাড়া। এই গ্রামগুলোতে প্রায় তিন হাজার মানুষের বসবাস করলেও এখন পর্যন্ত সেখানে কোন ত্রাণ সহায়তা যায়নি। কারণ ত্রাণ অপ্রতুল এবং এলাকা দুর্গম। এখানকার ১৫১ টি পরিবার ভাঙ্গনে ভিটে মাটি হারিয়েছে সেই তালিকা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ( ইউএনও) কে দেয়া হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button