স্বাস্থ্য

ছেলেদের ৭টি রোগের লক্ষণ

মেয়েদের তুলনায় চিকিৎসকের কাছে কম যান ছেলেরা। যদিও কোনো অসুখকেই অবহেলা করা ঠিক নয়। তাই যে কোনো শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

চলুন দেখে নেওয়া যাক, যে ৭টি লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তার দেখানো জরুরি-

টাক সমস্যা : কম বেশি প্রায় সব পুরুষেরই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু অনেক সময় এটা মারাত্মক রোগের লক্ষণও হতে পারে। ‘জার্নাল অব ক্লিনিকাল অনকোলজি’র এক গবেষণা অনুযায়ী, মাথার সামনের অংশে এবং তালুতে যাদের চুল কমে যাচ্ছে তাদের প্রোস্টেটে টিউমার হওয়ার উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য চুল পড়া সমস্যা দেখা দিলে শরীরের কোথাও টিউমার রয়েছে কি না পরীক্ষা করাতে হবে।

যৌনক্ষমতা কমে যাওয়া : প্রত্যেক পুরুষ মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে যৌনক্ষমতা কমতে থাকে। ‘জার্নাল অব সেক্সুয়াল মেডিসিন’র একটি গবেষণা বলছে, ৪০ বছরের পা দেওয়ার আগেই প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের পুরুষাঙ্গের দৃঢ়তাজনিত সমস্যা দেখা যায়। তার মানে হচ্ছে যৌনক্ষমতা কমে যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র বয়স নয়, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, মানসিক দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা ইত্যাদি দায়ী।

অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া : অণ্ডকোষে পিণ্ড দেখা দেওয়া বা ফুলে যাওয়া ছেলেদের অতি পরিচিত সমস্যার মধ্যে অন্যতম একটি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পিণ্ডটা নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে এটা অণ্ডকোষে ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। পিণ্ড দীর্ঘস্থায়ী হলে, ব্যথা করলে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

ঘন ঘন প্রস্রাব : হঠাৎ করে প্রচণ্ড প্রস্রাবের বেগ আসা, ঘন ঘন প্রস্রাব, রাতে প্রস্রাব বেশি হওয়া, বাথরুমে প্রবেশের আগেই কাপড় নষ্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি প্রোস্টেটয়ের মারাত্মক সমস্যার লক্ষণ। যেমন- প্রোস্টেট ক্যানসার, প্রোস্টেট ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। তাই এই উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ঘ্রাণশক্তি কমে যাওয়া : পুরুষের প্রজনন উর্বরতাজনীত সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে এটি। ঘ্রাণশক্তি কমে যাওয়ার অর্থ হলো- পুরুষের অণ্ডকোষ হরমোন তৈরি করছে কম। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই সমস্যাকে বলা হয় ‘অ্যানোসমিয়া’। এটি কালম্যানস রোগের লক্ষণও হতে পারে। যা ছেলেদের হরমোনের অভাবজনিত একটি রোগ।

পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে ব্যথা : পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে ব্যথা হওয়া গেঁটেবাতের লক্ষণ। এই রোগটি ছেলে-মেয়ে উভয়ের হতে পারে। তবে পুরুষের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা নারীদের তুলনায় তিনগুণ বেশি। বয়স্ক পুরুষদের প্রতি সাতজনের মধ্যে একজনের এই সমস্যা দেখা দেয়। যেখানে নারীদের ক্ষেত্রে প্রতি ১৬ জনের মধ্যে একজন। গেঁটেবাত পায়ের বুড়ো আঙ্গুলেই বেশি হয়। শরীরে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হওয়ার কারণে রক্ত ও হাড়ের জোড়ার চারপাশে সোডিয়াম সালফেটের স্ফটিক জমা হয়, ফলে গেঁটেবাত দেখা দেয়। সমস্যা মারাত্মক অবস্থা ধারণ করলে আক্রান্ত হাড়ের জোড়া স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ম্যান বুবস : নারীদের মতো পুরুষের বুকে স্তন হওয়া তিনটি বিষয়কে ইঙ্গিত করে থাকে। প্রথমত- ওজন বেশি। এ ক্ষেত্রে সমাধান হচ্ছে ওজন কমানো। দ্বিতীয়ত- ‘গাইনাকোমাস্টিয়া’। এটি মূলত ‘টেস্টোস্টেরন’ ও ‘ইস্ট্রোজেন’ হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তৃতীয়ত- যকৃতের সমস্যা। এই সমস্যা দেখা দিলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এ ক্ষেত্রে ‘গাইনাকোমাস্টিয়া’ দেখা দেয়। বয়স্কদের ‘ম্যান বুবস’ হওয়াটা অণ্ডকোষের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button