অর্থনীতি

পোশাক কারখানায় ডিজেলচালিত জেনারেটরের পাশাপাশি ব্যাটারি স্টোরেজের চিন্তা

তৈরি পোশাক শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ দিতে ব্যাকআপ পাওয়ার হিসেবে ডিজেল জেনারেটরের পাশাপাশি ব্যাটারি স্টোরেজ করার চিন্তা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ কাউন্সিল (বিইপিআরসি)। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ‘ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ এজ ব্যাকআপ পাওয়ার ফর দ্য গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এই তথ্য জানান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভার্জিনিয়া টেক অ্যাডভান্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিইপিআরসির চেয়ারম্যান সুবীর কিশোর চৌধুরীসহ বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রধানরা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘এই মুহূর্তে সরকারের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করা। বিশেষ করে, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন মানসম্মত বিদ্যুৎতের সরবরাহ করা খুবই জরুরি। এখন এই খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য ডিজেল জেনারেটর ব্যবহার করা হয়। এসব জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ভোল্টেজ কমে গেলে অথবা বিদ্যুৎ চলে গেলে উৎপাদন চলমান রাখা হয়। ডিজেলের চেয়ে বিদ্যুৎ অনেক বেশি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। তাই বিইপিআরসি নতুন প্রযুক্তির কথা বিবেচনা করে ব্যাক আপ স্টোরেজ হিসেবে ব্যাটারিতে বিদ্যুৎ স্টোরেজ করার বিষয়ে গবেষণা করতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, একটি ৫০০-কেভিএ ডিজেল জেনারেটরেরর মূল্য এখন ৪৭ হাজার ডলার। প্রতিকিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ পড়বে ২০ টাকা। অন্যদিকে, ৫০০ কিলোভোল্টেজ ব্যাটারি (দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ স্টোরেজ করতে পারবে) মূল্য পড়বে ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
মূল্যের এই পার্থক্যের বিষয়ে সাইফুর রহমান বলেন, ‘ডিজেল জেনারেটর মেইনটেইনস করতে হয়, ব্যাটারির ক্ষেত্রে এই মেইনটেইনস্ নেই বললে চলে।’ অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদে ডিজেলে জেনারেটরের কতদিন ব্যবহার করা যাবে, তার কোনও সময় নেই, ব্যাটারির ক্ষেত্রে প্রায় ১০ বছর ব্যবহার করা যাবে বলে তিনি জানান।
তবে, তৌফিক ই ইলাহী বলেন, ‘ডিজেল জেনারেটরের চেয়ে ব্যাটারির ব্যবহার অনেক সহজ হলেও মূল্য একটি বড় বিষয়। এক্ষেত্রে মূল্য আরও কমিয়ে আনা যায় কিনা, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।’ এজন্য দু’টির মূল্যের বিষয়ে আরও গবেষণা করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে আমরা নতুন নতুন প্রযুক্তি আনবো কিন্তু সেটি যেন কস্ট ইফেকটিভ হয়। তা না হলে প্রকল্প ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে।’
প্রকল্পটি পাইলটিং করা যায় কিনা—এ বিষয়ে আলোচনায় ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিদ সারওয়ার বলেন, ‘আমাদের শিল্প এলাকায়গুলোয় বিশেষ করে যাদের ৫০০ কিলোওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়, তাদের ক্ষেত্রে পাইলট প্রকল্প নেওয়া যেতে পারে।’ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরীক্ষামূলকভাবে এই ব্যাটারি স্টোরেজ করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button