রংপুর বিভাগসারাদেশ

ডিমলায় নিত্য প্রয়োজনীয় মূল্য স্থিতিশীল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ

ডিমলা, প্রতিনিধি: ডিমলায় নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার দাবিতে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের বিক্ষোভ৷ অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।
জাতীয় বাজেটের উন্নয়ন খাতে ৪০ ভাগ টাকা কৃখাতে বরাদ্দ করার দাবীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা’র মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
বুধবার (১-জুন) সকালে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের আয়োজনে উপজেলা স্মৃতি অম্লান চত্ত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে গিয়ে ক্ষেত মজুর, কৃষক, কৃষি রক্ষা তথা দেশ বাঁচানোর দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম সরকার, সদস্য মোঃ হানিফ ইসলাম ও ছাত্র সংগঠনের সদস্য মোঃ কাওসার আজম সরকার।
স্মারকবেদীতে উল্লেখ করেছে, কৃষিতে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। জীবন-জীবিকার পাশাপাশি আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নে কৃষি ওতপ্রভাবে জড়িয়ে আছে। খাদ্য শস্য উৎপাদন খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বাণিজ্যে কৃষি তথা কৃষক ক্ষেত মজুররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে৷ সরকার এই কথাগুলো স্বীকার করে আসছে বছরের পর বছর৷ বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত কৃষক ক্ষেতমজুরদের ভুয়সী প্রশংসা করে আসছেন৷ যারা বার বার কৃষিতে বাম্পার ফলন ফলাচ্ছেন৷ যারা দেশের আঠারো কোটি মানুষের খাবারের যোগারদাতা৷ তারা কিভাবে বেঁচে আছে৷ কিভাবে কৃষক ক্ষেতমজুর রা না খেয়ে থাকার বিনিময়ে কৃষি ফলন উৎপাদন করছে৷ তার বিনিময় তারা কি ধরনের জীবন যাপান করছে৷ তার সত্যিকার খবর সরকার কি জানেন বা রাখেন?
শুধু স্বীকৃতি আর প্রশংসায় কৃষকদের জীবন মানের উন্নয়ন হয় না৷ কৃষক উচ্চমূল্যে কৃষি উপকরণ কিনে লোকসানী দামে ধান সহ কৃষি ফলন-বিক্রি করে দিনে দিনে নিঃস্ব হচ্ছে৷ ব্যাংক ঋণের অতিরিক্ত সুদ মহাজনী ও ভয়ঙ্কর এনজিও ঋণের জালে আটকা পড়ে গলায় ফাঁসে পরিণত হয়েছে। তারপরও কৃষক উৎপাদন করতে বাধ্য হচ্ছে৷ কৃষি ফলনের লাভজনক মূল্য না পাওয়ায় লোকসান গুনতে গুনতে দেনার ধায়ে সম্পদ-সম্পত্তি হারিয়ে মধ্য কৃষক, দরিদ্র কৃষকে আর দরিদ্র কৃষক ভূমিহীন ক্ষেত মজুরে পরিনত হচ্ছে। মরার উপর খড়ার ঘা’র মত প্রায় বছর অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি, পাহাড়ি ঢলে হাওড় এলাকার ফসল তলিয়ে যাওয়া আগাম বন্যার ফলে কৃষক ও গ্রাম শহরের দরিদ্র মানুষ সর্বশান্ত হচ্ছে৷ এদের যেন দেখার কেউ নেই৷ অন্যদিকে কৃষি’র প্রাণ কোটি কোটি ক্ষেতমজুরদের সারা বছর নিশ্চিত কাজ না থাকায় এবং লাফিয়ে লাফিয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে ক্ষেত মজুররাতো বটেই এমনকি মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত কৃষকরা দিশেহারা৷ এদের কাছে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিলাসিতা নামান্তর বা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মূল্য বৃদ্ধি গুটি কয়েক মানুষের পৌষ মাস৷ আর কোটি কোটি মানুষের জন্য হলো সর্বনাশ৷ গেল করোনার পূর্বেই দেশে জনসংখ্যার তেইশ ভাগ মানুষ অর্থাৎ প্রায় চার কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে৷ করোনা কালে মাত্র দেড় বছরে প্রায় আরও তিন কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে নেমে গেছে৷ অন্যদিকে একই সময়ে চৌদ্দশক জন নতুন কোটিপতি সৃষ্টি হয়েছে৷ একই দেশে একই শাসনের অধিনে এটা কি করে সম্ভব৷ এটাকি উন্নয়নের রোল মডেল!  না কি শাসক শ্রেণির সেবা দাসত্বের ফলে এবং শোষনমুলক পুজিঁবাদি ব্যবস্থা ফলাফল৷
তাই আমাদের দাবী কৃষক ক্ষেতমজুর বাঁচাতে কৃষি তথা দেশ বাঁচাতে আগামী বাজেটের উন্নয়ন খাতের ৪০ ভাগ টাকা খোদ কৃষখাতে বরাদ্দের দাবী জানাই।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button