ময়মনসিংহ বিভাগসারাদেশ

শেরপুরে বোরো ক্ষেতে নেক ব্লাস্টের আক্রমণে দিশেহারা কৃষক

শেরপুর জেলায় চলতি মওসুমে ৯১ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করেছে কৃষকরা। দার-দেনা করে অনেক কষ্ট করে আবাদ করে ফসল ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর জেলার কৃষকগণ। ধান যখন সোনালি বর্ণ ধারণ করে পাকতে শুরু করেছে ঠিক তখনি শেরপুর সদরসহ জেলার প্রায় সব স্থানেই শতশত একর জমিতে নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ রোগের প্রাদুর্ভাবে ধানের শীষ আস্তে আস্তে সাদা হয়ে শুকিয়ে ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। ফলে ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এতে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা দেখা যায়, সদর উপজেলার বাজিতখিলা, সুলতানপুর, পাকুরিয়া, চরশেরপুর, কামারেররচর , ধলা ইউনিয়নসহ নকলার বরইতা, গনপদ্দী, উরফা, নকলা, গৌড়দ্বার, পাঠাকাটা, চরঅষ্টধর ও চন্দ্রকোনা ইউনিয়নসহ জেলার প্রায় সর্বত্রই এইরোগের প্রভাব পড়েছে। এসব এলাকার অনেক ক্ষেতের ধানের শীষ সাদা হয়ে শুকিয়ে গেছে এবং আস্তে আস্তে ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে।
কথা হয় কয়েকজন কৃষকের বাজিতখিলার কবির মিয়া, চরশেরপুরের আব্দুল মালেক, মো: মানোয়ার হোসেন, নদর হোসেন, কামারেরচরের নওয়াব আলী, নকলার বরইতার গ্রামের রহুল আমিন, শফিকুল ইসলামসহ অনেকের সাথে। তারা চিন্তিত কাংখিত ফলন পাওয়া নিয়ে।
নকলার বরইতার গ্রামের রহুল আমিন বলেন, আমগর গ্রামের যে কৃষি কর্মকর্তা আছে তার পরামর্শ নিয়া আমরা বাজার থাইক্কা কীটনাশক নিয়া ছিটাইতাছি তাও কাম হইতাছে না। আমি ঋণ নিয়া ধান চাষ করছি। ফলন না পাইলে, ঋণ কিবা কইরা পরিশোধ করমু।
সুলতানপুর গ্রামের কৃষক আমজাদ বলেন, আমরা গরিব কৃষক। ঋণধার কইরাই ধান লাগাই। ধানও ভালা হইছে, কিন্তু এহনতো ধানে চিটা হয়ে গেতাছে। ফলন না পাইলে। যে ঋণ করছি, এহন টেহা কই থনে দিমু।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, দিনের বেলায় প্রচন্ড গরম, রাতে ঠান্ডা আর সাকালে কুয়াসা পড়ায় ধানক্ষেতে এ রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগটি শুধু শেরপুর জেলাতেই না, প্রায় সারাদেশেই আবহাওয়া জনিত কারণে কমবেশি আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তারা। শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক ড: মুহিদ কুমার দেব জানান, জেলার যেসব জমিতে ব্রি-২৮ ও ৮৪ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। সেসব জমিতে এ নেক ব্লাষ্ট দেখা দিয়েছে। প্রতিবছরই এ জাতের ধানে এ নেকব্লাষ্ট আক্রমন করে থাকে। তাই আমরা কৃষকদের এ দুজাতের ধান চাষ না করতে বলে আসছি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button