সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রপতি বলা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পঁচাত্তরের জাতির পিতার হত্যার পর জিয়া ক্ষমতা দখল করেন। তাকে অনুসরণ করে এরশাদ প্রথমে মার্শাল ল’ জারি করেন। এরপর নিজেই ক্ষমতা দখল করেন। হাইকোর্ট এই দু’জনের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। ফলে এই দুজনের কাউকেই বৈধ রাষ্ট্রপতি বলা যায় না।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতার মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া ও এরশাদের ক্ষমতা দখলে আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করেছিল। এক মিলিটারি ডিক্টেটর থেকে আরেক মিলিটারি ডিক্টেটর আসুক, সেটা কখনোই আমাদের কাম্য ছিল না। এর বিরুদ্ধে আমরাই প্রতিবাদ করেছি। আমরা চেয়েছি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।
শেখ হাসিনা বলেন, জেনারেল এরশাদ যে ১৯৮২ সালে ক্ষমতা দখল করেছিলেন, সেই ক্ষমতা দখলের সুযোগটাই কিন্তু খালেদা জিয়াই করে দিয়েছিলেন। এই কারণেই তিনি খালেদা জিয়াকে শুধু দুটি বাড়িই নয়, নগদ ১০ লাখ টাকাসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলেন। যে কারণে জিয়া হত্যার ব্যাপারে যে মামলা হয়েছিল, সেই মামলা বিএনপি চালায়নি। তবে, বহু বছর পরে ১৯৯১ সালে বা তারপর খালেদা জিয়া জেনারেল এরশাদকে তার স্বামী হত্যার জন্য দায়ী করেছেন।
এরশাদের আমলে আওয়ামী লীগের সংসদ নির্বাচনের অংশ নিয়েছে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত চেয়েছি বলেই অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও ১৯৮৬ সালে নির্বাচনে অংশ নেই। ওই নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হলে এ ধরনের বিতর্কিত হতে হতো না। একটি গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত হতো। এরশাদ নিজেই সেই সংসদ ভেঙে দিয়ে আবারও বিতর্কিত হয়ে যান। এরপর ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে কোনও দল অংশ নেয়নি। তখন আন্দোলনের মুখে তিনি ১৯৯০ সালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
রওশন এরশাদের নেতৃত্বে ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় দলটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই নির্বাচনে যদি জনগণের অংশগ্রহণ না থাকতো, তাহলে আমরা ৫ বছর ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারতাম না।
বঙ্গবন্ধুর শুরু করা সাভার স্মৃতি সৌধ ও শহীদ মিনারের কাজ সম্পন্ন করাসহ এরশাদের বেশ কিছু কাজের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে জেনারেল এরশাদ সাহেব অমায়িক ছিলেন, মানুষের প্রতি তার দরদ ছিল।