বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে ১৪ দালালের জেল-জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে ১৪ জন দালালকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ জনের কারাদন্ড ও অন্য ৭ জনের জরিমানা করা হয়েছে। র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের সদস্যদের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: নাছিম রেজার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে বিকেল ৪টার পর্যন্ত টানা সাড়ে চার ঘন্টা এই অভিযান চালান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানকালে সদরের সাবরুল এলাকার মো: হাকিমের ছেলে রিপন (৩০), শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার ইউসুফ সরদারের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৫), একই এলাকার অজিত সরকারের ছেলে ভুলু সরকার (৩৮), সদরের হুকমাপুরের মৃত সবেত আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৫০), গাবতলী উপজেলার তেলিকাটা এলাকার আব্দুল কাদের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪০), একই উপজেলার ময়নাতলা এলাকার রাখাল চন্দ্র রায়ের ছেলে রতিশ চন্দ্র রায় (৪০) ও শাজাহানপুর উপজেলার বেতগাড়ী এলাকার মৃত কফিল উদ্দিন ফকিরের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৫৭)কে আটক করে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়।
এ ছাড়া শাজাহানপুর উপজেলার গন্ডগ্রামের আজিজার রহমানের মেয়ে ও দিগন্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক রুমা বেগমকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এদেরকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের আওতায় এই কারা ও অর্থ দণ্ড দেন বিচারক।
সেই সঙ্গে চকলোকমানের আব্দুল হান্নান সরকারের ছেলে আনিছুর রহমান (৪০)কে ৫ হাজার টাকা, ঠনঠনিয়ার রমজান আলীর ছেলে আমনুল ইসলাম আমিন (৩৯)কে ৫ হাজার টাকা, চকসুত্রাপুরের সিদ্দিক শেখের ছেলে রুবেল শেখ (৪০) কে ৫ হাজার টাকা, সদরের শাখারিয়ার সাদেক আলীর ছেলে মোঃ শহিদুল ইসলাম (৫২)কে ৫ হাজার টাকা, হরিগাড়ির কামাল প্রামাণিকের ছেলে সাত্তার প্রামানিক (২৬) কে ৫ হাজার টাকা এবং সদরের নূরইল এলাকার মৃত গফুর শেখের ছেলে বেলাল হোসেন (৫০)কে ৫ হাজার টাকা করে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে মুক্তি প্রদান করা হয়।
অভিযানে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট নাছিম রেজা বলেন, শজিমেক এলাকায় দালাল চক্র সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীদের প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তারা ভুয়া টেস্ট করায়। এই দালাল চক্র দীর্ঘদিন ধরে এই অপকর্ম করে আসছিল। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আর যাদের হাতেনাতে ধরা হয়েছে তারা অপরাধ স্বীকার করেছেন। এ কারণে তাদের জরিমানা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কিছু দালাল রোগীদের প্রতারণা করে বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অনেকে আবার ভুয়া প্রতিষ্ঠান কিংবা চিকিৎসকের খপ্পরে পড়ছেন। বিভিন্ন সময়ে পাওয়া অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বগুড়া র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন, (জি),বিএন বলেন, র্যাব-১২ এর সিপিএসসি, বগুড়া ক্যাম্প গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে জানতে পারে যে, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের তৎপরতা বেড়েছে। সেখানে এক শ্রেণির দালাল চক্র মেডিকেল কলেজের ভিতরে ও বাইরে ওৎ পেতে থাকে, যেন তারা নিরীহ মানুষকে প্রতারিত করতে পারে। দালালরা রোগীদের অতিরিক্ত টেস্ট ও বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়াসহ প্রতারিত করে এবং দালালি করে সরকারি হাসপাতালের সেবা গ্রহণ থেকে রোগীদের বিরত রাখে। সেই সঙ্গে তারা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের নিয়ে গিয়ে প্রতারিত করে আসছিল।