নাক বন্ধ হওয়ার কারণ ‘পলিপ’ নয় তো?
নাকের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে অতি পরিচিত একটি হলো পলিপ। অনেকে নাকের ভেতর মাংসপিন্ডের মতো কিছু দেখলেই পলিপ মনে করেন। এই ধারণা আসলে ঠিক নয়। নাকের ভেতরে যে পলিপ হয় তা অনেকটা পি আকৃতির হয়ে থাকে। তাই বলে সব পি আকৃতির মাংসপিন্ডই পলিপ নয়।
মূলত পলিপ হলো নাকের অভ্যন্তরে ফুলে যাওয়া ঝিল্লির একটি রূপ, যা দেখতে অনেকটা ইংরেজি পি অক্ষরের মতো দেখায়। আকার, আকৃতি, আয়তন ও রং— সবদিক মিলিয়ে এটি পরিপক্ব আঙুরের মতো দেখায়। অর্থাৎ পলিপ কখনো মাংসপেশির মতো লালচে হয় না, এটি গোলাকার ও ফ্যাকাসে হয়ে থাকে।
কেন হয় পলিপ?
উৎপত্তিস্থল বিবেচনা করলে সাধারণত দুই ধরনের পলিপ দেখা যায়। সব বয়সেই নাকে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে যারা হাঁচি-সর্দিতে বেশি আক্রান্ত হন এবং এই বিষয়টি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখেন না তাদের পলিপ হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি।
নাকের ভেতর পলিপ হওয়ার কারণও বেশ জটিল। সাধারণত নাক ও সাইনাসের অ্যালার্জি ও প্রদাহজনিত অবস্থা (রাইনো সাইনোসাইটিস) কিংবা নাকের ঝিল্লিতে অবস্থিত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সিলিয়া নামক কেশসম গাঠনিক কাঠামোর নড়াচড়ার কারণে এটি হয়। আবার নাকের নিঃসরণের অস্বাভাবিক গঠনের ফলেও পলিপ হতে পারে।
প্রদাহের কারণে নাকের কোষের বাইরে যে তরল বেরিয়ে আসে তা জমে নাকের ঝিল্লি ফুলে ওঠে পলিপের আকার নেয়।
কখন বুঝবেন পলিপ হয়েছে?
সাধারণত নাকের দুপাশে কিংবা একপাশে পলিপ হতে পারে। এই রোগের প্রধান উপসর্গ হলো নাক বন্ধ থাকা। নাক বন্ধ থাকার ফলে ঘ্রাণশক্তি লোপ পায়, মাথাব্যথা দেখা দেয়। পাশাপাশি নাক দিয়ে পানি ঝরা ও নাকে চুলকানি হওয়া সমস্যা দেখা দেয়।
নির্ণয় ও চিকিৎসা-
নাক পর্যবেক্ষণই পলিপ নির্ণয়ে যথেষ্ট। দরকার পড়লে সাইনাসের এক্স-রে এবং সিটি স্ক্যান করাতে পারেন। অপারেশন ব্যতীত এই সমস্যার পূর্নাঙ্গ চিকিৎসা সম্ভব নয়। তবে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ সেবনের মাধ্যমে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায় যা পলিপের ফোলাভাব কিছুটা কমিয়ে দেয়।
আপনি কি প্রায়ই নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া সমস্যায় ভুগছেন? এর জন্য পলিপ দায়ী নয় তো? সময় করে একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।