বরিশাল বিভাগসারাদেশ

বড়শিতে জীবিকা নির্বাহ

,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের কাঁঠালপাড়া গ্রামের অর্ধশাতাধিক পরিবারের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বড়শি। বর্তমানে নদীতে মাছ কম থাকায় কোন মতে খেয়ে না খেয়ে চলছে তাদের সংসার। এ পেশা থেকে অনেক জেলে এখন বেরিয়ে আসতে চাইছেন। তবে সরকারী সহয়তা পেলে এসব জেলেরা তাদের বহুদিনের এ পেশাকে টিকিয়ে রাখতে পারবেন বলে দাবি করেন। তাই এসব জেলেরা মৎস্য বিভাগের সহায়তা চান।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার কচুপাত্রা নদীতে সারিবদ্ধ ভাবে রাখা আছে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা। এ নৌকায় একজন কিংবা দুইজন জেলে একটি চিকন ছিপির মাথায় সুতা বেঁধে তৈরী করেছেন বড়শি। নদীতে এরকমের তিন চারটা বড়শি ফেলে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করছেন মাছের আশায়। কারো বড়শিতে ছোট বড় চিংড়ি, গুলসা, বগনি, কোড়াল, গাগঁড়া, পাঙ্গাশ, রুই, কাউন, পোয়া, বাইলা ও কাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে। এসব মাছ পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া বাজারে নিয়ে কেজি দরে বিক্রি করে চলচ্ছেন তাদের সংসার। আবার কোন জেলে ফিরছেন একবারে খালি হাতে। এখন নদীতে মাছের পরিমান কমে যাওয়ায় ইতিমধ্যে অনেক জেলে তাদের পেশার পরিবর্তন করেছেন।
কাঁঠালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৎস্যজীবী আবদুল হামিদ সরদার বলেন, বয়স হয়ে গেছে তাই নদীতে আর মাছ শিকার করতে চাইনা। তিন বছর ধরে এখানে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করছি। এক কেজি মাছ পেলে তিনশ থেকে চারশ টাকায় বেচতে পারি। প্রতিবন্ধী জেলে জালাল ফকির বলেন, সংসার চালাতে নৌকায় বসে বরশি দিয়ে মাছ শিকার করি। অন্য কোন কাজ করতে পারিনা। সকাল হলে কড়ইবাড়িয়া থেকে আমার স্ত্রী নৌকায় উঠিয়ে দেয়, আবার বাড়িতে গেলে তুলে নেয়। এত কষ্ট করেও নদীতে তেমন মাছ না থাকায় বেশি একটা ধরতে পারছিনা। কাঁঠালপাড়া গ্রামের ছলেম উদ্দিন জানান, এখানে দুই বছর আগে তিনি মাছ শিকার করতেন। তখন বড় সাইজের মাছ ধরা পড়তো। তবে এখন আর তেমন মাছ নাই। তাই তিনি মাছ ধরা ছেড়ে রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
চাকামইয়া ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, এই সকল মৎস্যজীবীদের সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। সরকারি কোন বরাদ্ধ আসলে তাদের প্রদান করা হবে।
কলাপাড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বর্তমানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর (কাঁসারি, বাঁশ ও বেত শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত, কামার, কুমার, তাতী, নাপিত, বাউল শিল্পী) ১০টি পেশার মানুষের জরিপ চলছে। এদের মধ্যে বড়শি জেলেদেরও তালিকাভূক্ত করা যাবে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, তাদের জেলে কার্ড করার উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে। এছাড়া সরকারী কোন বরাদ্ধ আসলে তাদের সহয়তা করা হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button