আন্তর্জাতিক

ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা বাড়ছে নেতানইয়াহুরই

গত এপ্রিলের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা মেলেনি। সরকার গঠনের দোলাচল কাটাতে ফের নির্বাচনের পথে হেঁটেছে ইজরায়েল। কিন্তু তাতেও সুস্পষ্ট জনাদেশ পায়নি কোনও দল। প্রাথমিক ভাবে অবশ্য ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টির প্রধান বেনি গ্যান্টজের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে সোমবার আরব দলগুলির যুক্ত ফ্রন্টের তিন নেতা জানিয়েছেন, তাঁরা ইজরায়েলের গত এক দশকের অবিসংবাদী প্রধান বেঞ্জামিন নেতানইয়াহুর বিরোধী গ্যান্টজকে সমর্থন করবেন না। ফলে, আপাতত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ফের এক বার প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার সম্ভাবনা বাড়ল নেতানইয়াহুর।

রবিবার অবশ্য ইজরায়েলের প্যালেস্তাইনি আরব বাসিন্দাদের প্রতিনিধি, ‘আরব জয়েন্ট লিস্ট’ জানিয়েছিল, তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বেনি গ্যান্টজকে সমর্থন করবে। এমনিতে ২০১৪ সালে গাজায় প্যালেস্তাইনের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী যুদ্ধ শুরুর নেপথ্যে থাকা গ্যান্টজকে সবিশেষ পছন্দ নয় তাঁদের। কিন্তু নেতানইয়াহুর শাসনকালে ইজরায়েলে বসবাসকারী প্যালেস্তাইনিদের আওয়াজ কার্যত শোনা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ তাঁদের। তাই গ্যান্টজকেই সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। এ বারের নির্বাচনে ১৩টি আসন পেয়েছে আরব জয়েন্ট লিস্টের দল। ফলে রাজনৈতিক হিসেব নিকেশ করলে দেখা যাচ্ছিল, ১২০ আসনের ইজরায়েলি পার্লামেন্ট ‘নেসেট’-এ আরব জয়েন্ট লিস্ট-এর সমর্থন পেলে গ্যান্টজ দু’টি আসনে নেতানইয়াহুর থেকে এগিয়ে থাকছিলেন। কিন্তু সোমবার সকালে ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিন জানান, প্যালেস্তিনিয়ান ব্যালাড পার্টির তিন আরব নেতা আসেননি। পরে তিনি জানান, গ্যান্টজের পক্ষে আরব জয়েন্ট লিস্টের দশ জনের সমর্থন গিয়েছে যার অর্থ নেতানইয়াহুর পক্ষে তিনটি ভোট পড়েছে। অর্থাৎ নেতানইয়াহু আপাতত একটি আসনে এগিয়ে। আপাতত প্রেসিডেন্ট সিদ্ধান্ত নেবেন, তিনি কাকে সরকার গঠনের জন্য ডাকবেন।

দস্তুর অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠতা যাঁর রয়েছে তাঁকেই সরকার গড়ার জন্য ডাকার কথা তাঁর। কিন্তু এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। রিভলিনের দাবি, সোমবার সন্ধ্যায় নেতানইয়াহু ও গ্যান্টজ, দুপক্ষের সঙ্গেই রুদ্ধদ্বার বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। যদি তাঁর পরেও ঐক্যমতে না পৌঁছন তাঁরা, সেক্ষেত্রে সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত কাকে দেওয়া হবে সে ব্যাপারে শেষ সিদ্ধান্ত রিভলিনই নেবেন। সেই প্রার্থীর হাতে ছ’সপ্তাহ সময় থাকবে। সে সময়ের মধ্যে তিনি সরকার গঠনে ব্যর্থ হলে, দ্বিতীয় প্রার্থী সে সুযোগ পাবেন।

এর মধ্যে ‘কিংমেকার’-এর ভূমিকা নিতে চলা ওয়াইজরায়েল বেইতেনু পার্টির প্রধান অ্যাভিগদর লিবারম্যান আবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দুই প্রার্থীর কাউকেই প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য সমর্থন করবেন না। একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, নেতানইয়াহু ও গ্যান্টজ যেন কয়েন-টস করে সিদ্ধান্ত নেন তাঁদের মধ্যে কে এই সতত পরিবর্তনশীল সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব নেবেন। লিবারম্যান প্রথম থেকেই আর্জি জানাচ্ছেন, তাঁর দল নেতানইয়াহুর লাইকুদ পার্টি ও গ্যান্টজের ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টির সঙ্গে মিলে এক ঐক্যবদ্ধ সরকার গড়তে চায়। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই তাতে আরব দল কিংবা ধর্মীয় দলগুলিকে থাকতে দেবেন না তিনি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button