ইবিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের সাদ্দাম হোসেন হলের সামনে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় কয়েকটি গুলি ও চারটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ২০ থেকে ২৫ জন কর্মী নিয়ে সাদ্দাম হোসেন হলের ২৩৫ নম্বর কক্ষে যান। ছাত্রলীগের বিদ্রোহী পক্ষের কর্মী মোশাররফ হোসেন নীলকে কক্ষ থেকে বের করে দেন। পরে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সুমনসহ অন্যরা নীলকে মারধর করে চলে যান। নীল তাঁর পক্ষের নেতাকর্মীদের ঘটনাটি জানান।
খবর পেয়ে আলমগীর হোসেন আলো, তন্ময় সাহা টনি, বিপুল খানসহ বিদ্রোহী পক্ষের কর্মীরা সাদ্দাম হোসেন হলের সামনে অবস্থান নেন। বিদ্রোহী পক্ষ সুমনকে মারধর শুরু করলে রাকিব ও তাঁর কর্মীরা পালিয়ে যায়।
পরে রাত ১টার দিকে রাকিবের কর্মীরা জিয়া হল মোড়ে ও বিদ্রোহী পক্ষের কর্মীরা বঙ্গবন্ধু হলের সামনে রড, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র হাতে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া।
শেখ রাসেল হলের সামনে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে জিয়া হল ও লালন শাহ হলের সামনে কয়েকটি গুলি ও ছয়টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।
এদিকে, ধাওয়া খেয়ে হলের ভেতরে পালিয়ে যান রাকিবের কর্মীরা। এ ঘটনায় রাকিবের কর্মী সুমনের হাত ভেঙে যায়। দুই সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়।
পরে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ ও সহকারী প্রক্টর নাসিমুজ্জামান গেলে রাত আড়াইটার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী পক্ষের কর্মী বিপুল খান বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক গভীর রাতে হলে গিয়ে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মীকে মারধর করবে, এটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত? প্রতিনিয়ত আমাদের কর্মীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।’
ইবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘ক্যাম্পাসে কিছু বহিরাগত প্রবেশ করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। বহিরাগতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মারধর করার বিষয়ে জানতে চাইলে রাকিব বলেন, ‘আমরা কাউকে মারধর করিনি। তারাই আমার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে এবং একজনের হাত ভেঙে দিয়েছে।’
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘রাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন আছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল প্রভোস্টদের নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’