শিক্ষাঙ্গন

দাবি আদায়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরু

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আপগ্রেড করার দাবিতে পাঁচ দিনব্যাপী কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ। গ্রেড বৈষম্য নিরসনের দাবিতে দেশের ৬৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় পৌনে চার লাখ শিক্ষক লাগাতার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন।

আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) প্রথমদিনে ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। এছাড়া কাল ৩ ঘণ্টা, বুধবার অর্ধ দিবস এবং বৃহস্পতিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি করবেন। আগামী ২৩ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশ করবেন শিক্ষকরা। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও বার্ষিক পরীক্ষার আগে এ কর্মসূচির কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ঐক্য পরিষদের নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামোয় সরকারি অন্যান্য বিভাগের কর্মচারীদের সঙ্গে ব্যাপক ব্যবধান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে এবং প্রশিক্ষণ নিয়েও প্রধান শিক্ষকরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। আর সহকারী শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১৪তম গ্রেডে। ১৬ বছর চাকরির পর একজন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকের বেতন-ভাতার ব্যবধান হবে ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে একজন প্রধান শিক্ষক যে স্কেলে চাকরি শুরু করেন একজন সহকারী শিক্ষক ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সে স্কেলেরও একধাপ নিচে চাকরি শেষ করেন, যা সহকারী শিক্ষক ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের জন্য চরম বৈষম্যের।

তিনি জানান, সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণ এবং প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদাসহ ১০ম গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণের দাবিতে এ কর্মবিরতি পালনে শিক্ষকরা বাধ্য হচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, গত ৬ বছর এ দাবি নিয়ে সহকারী শিক্ষকরা দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। এর অংশ হিসেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় তা নাকচ করেছে। তাই তারা এ কর্মসূচিতে যাচ্ছেন।

অন্য দিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজ বলেন, সহকারী শিক্ষকদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের দাবি যৌক্তিক। তাদের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এ মুহূর্তে প্রধান শিক্ষক সমিতির কোনো আন্দোলন কর্মসূচি নেই।

শিক্ষক নেতারা জানান, যোগদানের সময় একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১২তম গ্রেডে ১১ হাজার ৩০০ টাকা এবং সহকারী শিক্ষকরা ১৫তম গ্রেডে ৯ হাজার ৭০০ টাকা বেতন পান। অথচ অন্যান্য সরকারি বিভাগে শিক্ষকদের চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে উপরের গ্রেড ও বেতন বেশি পাচ্ছেন। একজন প্রধান শিক্ষক যে স্কেলে চাকরি শুরু করেন একজন সহকারী শিক্ষক ও একজন পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেই স্কেলেরও ১ গ্রেড নিচে চাকরি শেষ করে থাকেন। যা সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের জন্য চরম বৈষম্য। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছেন। সরকার পক্ষ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও আজও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button