কানে কিছু ঢুকলে
শিশুদের বিশেষ করে তিন-চার বছরের ছেলেমেয়েদের একটা সহজাত প্রবণতা আছে যে, ছোট ছোট কোনো জিনিস নিয়ে খেলার সময় নাক, কান বা মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া। বড়দের একটা অভ্যাস আছে কোনো কিছু দিয়ে (যেমন- কটনবাড, মুরগির পালক, ম্যাচের কাঠি) কান খোঁচানো, চুলকানো। এতে করে খোঁচানোর সময় কাঠি ভেঙে বা কটনবাডের কটন কানে রয়ে যেতে পারে।
যেসব বস্তু কানে ঢুকতে পারে-
১. কটনবাড বা তুলার অংশ
২. ম্যাচের কাঠি, পুঁতির দানা, বল বিয়ারিং
৩. পেনসিলের শিস
৪. পাখি বা মুরগির পালক
৫. শস্যদানা- চাল, ধান, ফলের বীজ, মুড়ি, চিঁড়া ইত্যাদি
৬. রাবার, কাগজ, ফোম, ছোট ছোট খেলনার অংশ, আরো কত কী?
৭. অনেক সময় জীবন্ত পোকামাকড় যেমন- মশা, মাছি, আস্ত তেলাপোকা, পিঁপড়া ইত্যাদি কানের ভেতর প্রবেশ করতে পারে।
উপসর্গগুলো:
১. কানে প্রচণ্ড অস্বস্তি হওয়া
২. কানে ব্যথা
৩. কানে কম শুনতে পাওয়া
৪. জীবন্ত পোকামাকড় কানে ঢুকে গেলে ভীষণ বিরক্তি এমনকি ভয়ের উদ্রেক হতে পারে।
চিকিৎসা:
কানে যেকোনো কিছু ঢুকে গেলে উপযুক্ত চিকিৎসা হলো এটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বের করে ফেলা। অবশ্যই এটার জন্য নাক, কান, গলা বিভাগ সম্পন্ন হাসপাতাল অথবা ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
কানে জীবন্ত পোকা ঢুকে গেলে আগে অলিভ অয়েল দিতে হবে, যাতে করে এটি মারা যায় তারপর বের করতে হবে। বাসায় অনভিজ্ঞ হাতে অযথা খোঁচাখুঁচি করবেন না বা অদক্ষ কাউকে দিয়ে বের করার চেষ্টা করবেন না। শিশুরা ভয়ে কান্না বা নড়াচড়া করলে এবং অসহযোগিতা করলে জোরপূর্বক বের করার চেষ্টা না করে, সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে হাসপাতালে নিয়ে বের করাই উত্তম কাজ।
বের না করলে বা অদক্ষ হাতে চেষ্টা করার জটিলতা:
১. বহিঃকর্ণে আঘাত লাগা এবং তা থেকে রক্তক্ষরণ হওয়া
২. কানের পর্দা ফেটে যাওয়া
৩. মধ্যকর্ণের ভেতরে থাকা ছোট অস্থিগুলোতে আঘাত লাগা
৪. কানে ইনফেকশন হওয়া
৫. সর্বোপরি মানবদেহের মূল্যবান পাঁচটি অঙ্গের একটি হলো কান, যার শ্রবণশক্তি কমেও যেতে পারে
মানসম্পন্ন কোম্পানির তৈরি খেলনার প্যাকেটের গায়ে বয়সসীমা লেখা থাকে। আরো লেখা থাকে, এ খেলনায় ছোট পার্টস আছে এবং তা তিন বছরের নিচে শিশুদের ব্যবহারের জন্য নয়।
বয়স্কদের উচিত সচেতন থাকা, অযথা যেকোনো কিছু দিয়ে কান না খোঁচানো এবং ছোটদের ছোট ছোট খেলনা দিয়ে খেলতে না দেয়া।
এরপরও কানে কিছু ঢুকলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া এবং উপযুক্ত পরামর্শ গ্রহণ করা।