বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

স্মার্ট বাজারে ক্লাসিক: নোকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ

নোকিয়া কর্পোরেশন’ ফিনল্যান্ড ভিত্তিক বহুজাতিক টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত কোম্পানি। এটি পৃথিবীর বৃহত্তম মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।

২০১১ সাল পর্যন্ত নোকিয়া বিশ্বের সর্ববৃহৎ মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী কোম্পানি ছিল। তবে বাজারে টাচস্ক্রিন প্রযুক্তির আবির্ভাবের ফলে নোকিয়া ধীরে ধীরে পিছিয়ে যায়। গুগলের তৈরী এনড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার না করার ঘোষণায় নোকিয়ার শেয়ারের দাম ৪০ মার্কিন ডলার থেকে পরে মাত্র ২ মার্কিন ডলারে নেমে আসে। নোকিয়ার নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম সিম্বিয়ানের বদলে নোকিয়া মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যাবহারের জন্য মাইক্রোসফটের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। এই সিদ্ধান্তের ফলেও নোকিয়ার বিক্রি আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়।

নোকিয়া প্রতি বছরই তাদের স্বর্ণযুগের জনপ্রিয় ফোনগুলোর নতুন সংস্করণ বাজারে ছাড়ে। আরো উন্নত এবং সময়োপযোগী করে।

ফ্লিপ ফোনের জনপ্রিয়তা আবারো ছড়াতে নোকিয়া সম্প্রতি বার্লিনে তাদের একটি ইভেন্টে লঞ্চ করেছে নোকিয়া ২৭২০ ফ্লিপ। যেটা নোকিয়া অরিজিনাল সিরিজের আরেকটি ফোন! এবং একে নিয়ে যে হাইপ তৈরী হয়েছে, সেটা দেখে টেক বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ২০১৭ সালে বাজারে আসা নোকিয়া ৩৩১০ এর মত এটিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে।

আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে, ২০০৯ সালের মে মাসে নোকিয়া আনভেইল করেছিল তাদের ২৭২০ ফ্লিপ ফোনটি, এবং তারই উপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে বর্তমান নোকিয়া ২৭২০। যার দুটি কালারের মধ্যে একটি সাদা, আরেকটি কালো।

নোকিয়া ২৭২০ ফ্লিপের রয়েছে প্রধান ২.৮” কালার ডিসপ্লে এবং বাহিরে রয়েছে ১.৪” ডিসপ্লে, যেখানে সবসময় উল্লেখ করা থাকবে সময়, ঠিক যেমনটা আগেকার ফ্লিপ ফোনগুলোতে ছিল। যার ফলে এটাকে অলওয়েজ অন ডিসপ্লেও বলা যেতে পারে।

আর এই সেকেন্ডারি ডিসপ্লের আরেকটি ফিচার হল, কেউ কল করলে সেখানে দেখাবে, এবং ফোনটি ফ্লিপ আপ করা ছাড়াই কল রিসিভ করা যাবে।

তা ছাড়াও, নোকিয়া ২৭২০ এর ডান পাশে ভলিউম রকার, এবং বাম পাশে থাকছে একটি সিকিউরিটি কি। যেটা গুগল অ্যাসিস্টেন্ট এ পরিবর্তন করা যাবে। সেই সাথে কি প্যাডের সাইজ অন্যান্য ফিচার ফোন থেকে বড় হওয়ায়, টাইপিং করার এক্সপেরিয়েন্স অনেকটাই ভাল হবে।

এখানে ডিজাইনে অনেকটাই মিল দেখা গেলেও, অপারেটিং সিস্টেম হিসাবে সিম্বিয়ানের পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে কাইওএস (KaiOS), যেটা বর্তমানে পৃথিবীর ৩য় বহূল ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম।

কাইওএস ফিচার ফোনের জন্য সবথেকে ভাল একটি অপশন, কেননা এখানে রয়েছে স্মার্টফোনের মত অনেক ধরনের অ্যাপ্লিকেশন যেমন, ফেসবুক, টুইটার, ওয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, গুগল ম্যাপস, গুগল অ্যাসিস্টেন্ট এবং আরো অনেক।

নোকিয়া ২৭২০ এর রয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ২০৫ চিপসেট, যা দৈনন্দিন সব কাজ ভাল মতই করতে পারবে বলে আশা করা যায়। আর যেহেতু কাইওএস এর সকল অ্যাপ্লিকেশনগুলো ওয়েব অ্যাপস, তাই ইউআই তেমন ভারিও হবে না।

ফিচার ফোনের ব্যাটারি লাইফ হচ্ছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নোকিয়া দাবি করছে ২৭২০ ফ্লিপের রয়েছে ২৭ দিনের স্ট্যান্ডবাই টাইম, যেটা ফোনটির ভাল একটি দিক হতে পারে।

এতকিছুর পরও কোনকিছুই পারফেক্ট না! নোকিয়া ২৭২০ ফ্লিপের পুরোটাই পলি কার্বনেটের তৈরী। তাই খুবি সহজে স্ক্র‍্যাচ পড়বে। আর এই বাজেটের একটি ফোনে ইউএসবি টাইপ সি আশা করা যায়। যা তারা দেয়নি। কিন্তু যারা ফোনটিকে যত্নের সাথে ব্যবহার করতে প্রস্তুত, তাদের জন্য অবশ্যই শুভ কামনা!

অবশেষে দাম! বাংলাদেশে ফোনটির দাম হাঁকানো হয়েছে ৭৯৯৯টাকা। যেটা কিছুটা বেশিই বলা যায়! কেননা ১০ হাজার টাকায় রয়েছে অসংখ্য ভাল ভাল স্মার্টফোন। কিন্তু তারপরেও যারা সেকেন্ডারি ফোন কিনতে চান, তাদের জন্য নোকিয়া ২৭২০ অবশ্যই পছন্দের তালিকায় থাকবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button