রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

ভোলাহাটে ঘরের মধ্যে মাছ চাষ

ভোলাহাট(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ পুকুর, নদী, ধানের জমিতে মাছ চাষ না, ঘরের মধ্যে মাছ চাষ করে সাম্বলম্বী হতে চাই ভোলাহাট উপজেলার ফতেপুর গ্রামের সাবেক জামবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মৃত: তোজাম্মেল হকের ছেলে সইবুর রহমান। নি¤œ মাধ্যমিক পাশ করতে পারেননি তিনি। বাবা মারা যাওয়ার পর শিক্ষা বঞ্চিত হয়ে কর্মসংস্থানের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে নিকটতম এক শিক্ষকের পরামশে বায়োফ্লক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করেন সইবুর। একেবারে আনাড়ি অবস্থায় নতুন এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে গিয়ে হুঁচট না খেতে হয় মর্মে বগুড়ায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণের পর শুরু করেন নিজ বাড়ীতে বায়েফ্লক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ। পরিত্যাক্ত ৩টি ঘরে নিজস্ব ও নিকট আত্মীয়দের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মোট ৪ লাখ টাকা দিয়ে ৭ মাস পূর্বে শুরু করেন প্রকল্পের কাজ। সইবুর রহমান বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর শিক্ষাদীক্ষা কপালে জুটেনি। রুজিরোজকারের জন্য বিভিন্ন স্থানে ছুটাছুটি করে বেড়িয়েছি। মাছ চাষ করে কমসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পুকুর লীজ নিবো কিন্তু তেমন অর্থ না থাকায় প্রশিক্ষণ নিয়ে অবশেষে বায়োফ্লক বৈজ্ঞানিক চাষে নিজ বাড়ীর ৩টি ঘরে মাছ চাষ শুরু করেছি। তিনি জানান, আমার কাছে প্রকল্প করার মত টাকা-পয়সা না থাকায় আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়ে ৭ মাস পূর্বে প্রকল্পের কাজ শুরু করি। প্রশিক্ষণ ও নিজস্ব মেধা বুদ্ধি দিয়ে মাছ চাষ অব্যহত রেখেছি। গত বছরের ঘর প্রস্তুত করে নভেম্বর মাসে ৩টি ঘরে মাছ ছাড়া হয়। প্রস্তুতকৃত ঘরগুলোর দৈঘ্য সাড়ে ১৩ ও প্রস্থ্য সাড়ে ৯ ফুট। প্রত্যক ঘরে পানি সরবরাহের সংযোগ। ২টি ঘরের ৩ ফুট ও রেনু চাষের ঘরে ২ফুট উচ্চতা পানি রয়েছে। বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ঘর প্রস্তুত করে একটি ঘরে ৬ হাজার শিং মাছ, আরেকটি ঘরে ৬ হাজার কৈ মাছ ও অপর ঘরে দেড় লাখ সিলভর ও জাপানি রুই মাছের রেনু দেয়া আছে। সইবুর বলেন, এ মাছ আসছে রমজান মাসের শেষে উঠিয়ে বিক্রয় করলে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার আয় হবে। তিনি বলেন, মাছ চাষের পর স্থানীয় মৎস্য অফিসের কোন সহযোগিতা পায়নি। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রভাষক রাব্বুল হোসেন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানাজ খাতুন প্রকল্প দেখে গেছেন। সইবুর আরো বলেন, আমি যে ৩টি ঘরে মাছ চাষ করছি তা পুকুরে চাষ করলে ৩০ বিঘা জমির পুকুর লাগবে। অল্প জায়গায় ঘরের মধ্যে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হলে জীবনমান্নোয়ন হবে এবং আমাকে দেখে আরো বেকার যুবকেরা উৎসাহিত হয়ে মাছ চাষ করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। তিনি সরকারী বেসরকারী ঋণ সুবিধা দাবী করে বলেন, ঋণ সুবিধা পেলে প্রকল্প আরো বড় হবে এবং তার প্রকল্প থেকে আরো ১০জন মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সরজমিন প্রকল্পে গেলে, প্রভাষক শরিফুল ইসলাম বলেন, বেকার যুবকদের জন্য ঘরের মধ্যে মাছ চাষ করলে বেকারত্ব দূর হবে এবং এলাকায় অপরাধ কমে আসবে। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় ভাবে ঋণ সুবিধা ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষনের উদ্যোগ নিলে ভোলাহাট উপজেলায় মাছের চাহিদা পূরণসহ এলাকার বাইরে মাছ বাজার জাত করা সম্ভব হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button